মাগুরায় পোড়ানো লাশের পরিচয় শনাক্ত, গ্রেপ্তার ৩

মাগুরায় ছয় দিন পর পোড়ানো মৃতদেহের পরিচয় শনাক্ত এবং লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের কারণ উন্মোচন করেছে পুলিশ। আজ রোববার দুপুরে মাগুরা সদর থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. জহিরুল ইসলাম এ জানান।
পুলিশ সুপার বলেন, জুয়াখেলাকে কেন্দ্র করেই সঙ্গী জুয়াড়িরা মো. এসকেন মোল্যাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেছেন। গত ১ মার্চ সদর উপজেলার দাড়িয়াপুর মাঝপাড়ার নবগঙ্গা নদীর পাড়ে শ্মশান সংলগ্ন একটি মেহগনি বাগানে এক ব্যক্তিকে পুড়িয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। লাশের পরিচয় অজ্ঞাত থাকায় পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা মামলা রুজু করে। পুলিশি অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, পোড়ানো লাশটি মো. এসকেন মোল্যার (৭৩)। তাঁর বাড়ি ঘটনাস্থল থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হাটগোপালপুর খুলল বেড়বাড়ী পশ্চিমপাড়ায়। তিনি গবাদি পশু ব্যবসায়ী এবং পেশাদার জুয়াড়ি হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
পুলিশ সুপার জানান, জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করেই তাঁর সঙ্গী পাঁচ জুয়াড়ি মিলে এসকেন মোল্যাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেন। হত্যার সঙ্গে জড়িত গ্রেপ্তার হওয়া মিনহাজ ওরফে মিরাজের স্বীকারোক্তিতে ঘটনাস্থলের পাশের রাজারামপুর উত্তরপাড়ার আনছার উদ্দিন বিশ্বাস (৬৫) ও সাচানী রাউতাড়া গ্রামের মো. শহর আলীকে (৬৯) গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপর দুজনকে পুলিশ গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে।
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জয়নাল আবেদিন জানান, হত্যাকারীরা দীর্ঘদিন এসকেন মোল্যার সঙ্গে জুয়া খেলে প্রায়ই হেরে যেতেন। তাই তাঁরা ওই দিন পরিকল্পনা করে ফোনে মিরাজের মাধ্যমে তাঁকে ডেকে রাত ৯টা থেকে ওই এলাকায় জুয়ার আসর বসান। রাত গভীর হলে তাঁর মাথায় আঘাত করে এবং গলায় চেইন দিয়ে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন তাঁরা। পরে জড়ো করা শুকনো পাতায় লাশ রেখে আগুন ধরিয়ে দিয়ে আসামিরা চলে যান। নিহত ব্যক্তির পাশে পড়ে থাকা ভাঙা একটি মোবাইল ফোনসেটের সূত্রেই আসামি মিরাজকে ধরতে পুলিশ অভিযান শুরু করে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থলের পাশেই আলমখালী বাজারের শিবনাথ কুণ্ডুর ধানের চাতালে মিরাজ কাজ করতেন। তাঁকে আটকের পরই হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি পরিষ্কার হয়।
গত ১ মার্চ মাগুরা সদর উপজেলার দাড়িয়াপুর মাঝপাড়ার নবগঙ্গা নদীর পাড়ে শ্মশান সংলগ্ন একটি মেহগনি বাগানে এক ব্যক্তিকে পুড়িয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। লাশের পাশে একটি ভাঙা মোবাইল ফোনসেট, তাস ও এক জোড়া জুতা পাওয়া যায়। আগুনে লাশের মুখ ও দেহ পুড়ে বিকৃত হয়ে যাওয়ায় স্থানীয়রা পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি।