মা ইলিশ রক্ষায় সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকায় নৌবাহিনীর অভিযান
মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করছে নৌবাহিনীর সাতটি জাহাজ।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এ তথ্য জানিয়েছে।
সমন্বিত বিশেষ অভিযান
চলতি বছর প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় গতকাল রোববার মধ্যরাত থেকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সমন্বিত বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের ৩৮টি জেলায় এ বিশেষ অভিযান পরিচালিত হবে।
এর আগে গতকাল রোববার সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদের সভাপতিত্বে এ সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বলা হয়, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় মৎস্য দপ্তর, বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাব, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী সমন্বিতভাবে এ অভিযান পরিচালনা করবে। সংবাদ সংস্থা বাসস এ খবর জানিয়েছে।
অভিযান বাস্তবায়নকালে ২০টি জেলা—ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ও বাগেরহাট জেলার নদ-নদী, মোহনা ও সাগরে ইলিশসহ সকল প্রকার মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। অপর ১৮টি জেলা তথা নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, জামালপুর, রাজশাহী, নাটোর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, খুলনা, কুষ্টিয়া ও নড়াইল জেলার নদ-নদীতে ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ থাকবে।
সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ বলেন, সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে, ইলিশ মাছকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে। মৎস্য বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতেই ইলিশের সর্বোচ্চ প্রজনন সময় বিবেচনা করে এ বছর ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
রওনক মাহমুদ আরও যোগ করেন, ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকাকালে এ বছর পাঁচ লাখ ৫৫ হাজার ৯৪৪ জেলে পরিবারের জন্য ১১ হাজার ১১৮ দশমিক ৮৮ মেট্রিক টন ভিজিএফ চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইলিশ ধরা বন্ধকালে যাতে পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেরা অবৈধ মৎস্য আহরণ করতে না পারে, সেজন্য কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সফল করতে এ বছর ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
ইলিশ সম্পদ সংরক্ষণে ‘প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিশ অ্যাক্ট, ১৯৫০’-এর অধীন প্রণীত ‘প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিশ রুলস, ১৯৮৫’ অনুযায়ী ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহণ, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ করে গত ২৬ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
এই ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহণ, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় দন্ডনীয় অপরাধ। এই আইন অমান্যকারী কমপক্ষে এক থেকে সর্বোচ্চ দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।