যমুনার অব্যাহত ভাঙনে ২০ বাড়ি বিলীন, প্রকল্প অনুমোদন
উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারি বর্ষণে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি ও ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের পাচিল এলাকায় গত তিন দিনে ২০টি ঘড়বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। এদিকে গত ৮ জুন সাড়ে ছয় কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের পাচিল এলাকায় ২০টি ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষগুলো সর্বস্ব হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছে অন্যের বাড়ি ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে।
ভাঙনের মুখে রয়েছে আরও অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ স্থাপনা। এ ছাড়া এনায়েতপুর-শাহজাদপুর আঞ্চলিক সড়কটিও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
এদিকে, ভাঙনের খবর এনটিভি অনলাইন ও এনটিভিতে প্রচার হওয়ার পর ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু করার কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। জিও ব্যাগে বালি ভরে নদীতে ফেলার জন্য ভাঙন কবলিত এলাকায় প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে।
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরের খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ থেকে শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী পর্যন্ত সাড়ে ছয় কিলোমিটার নদী তীর সংরক্ষণ বাঁধ প্রকল্পটি গত ৮ জুন একনেকে অনুমোদন হয়েছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ভাঙন কবলিত মানুষ। দীর্ঘ প্রতীক্ষার এই প্রকল্প অনুমোদনের ফলে ভাঙন কবলিত মানুষের মধ্যে বেঁচে থাকার নতুন করে আশা জাগিয়েছে। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধটি নির্মাণের দাবি জানিয়েছে।
কৈজুরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘কৈজুরী ইউনিয়নের হাট পাচিল গ্রামে গত তিন দিনে অন্তত ২০টি বাড়ি ছাড়াও ফসলি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে ঘরবাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে অনেকে।’
ভাঙন রোধে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হওয়ায় তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘বাঁধ নির্মাণে আমরা প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। মানববন্ধন করে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। প্রধানমন্ত্রী ভাঙনকবলিত মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথা চিন্তা করে প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়েছেন। এতে এই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হবে।’
সিরাজগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে বালিভর্তি জিওব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। ওই অঞ্চল যাতে আর না ভাঙে, সেদিকে লক্ষ্য রেখে পাউবো কাজ করছে। এরই মধ্যেই আমরা জরিপ কাজ শুরু করেছি। শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হবে।’