রংপুরে স্ত্রীকে খুন করে থানায় গিয়ে স্বামীর আত্মসমর্পণ
রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় স্ত্রী আয়শা বেগমকে (৩৬) খুন করে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন স্বামী মাইনুদ্দীন। স্ত্রীর পরকীয়ার সম্পর্ক থাকার কারণে তাঁকে হত্যা করেছেন বলে থানায় জবানবন্দি দিয়েছেন মাইনুদ্দীন।
আজ শুক্রবার (৩ জুন) সকাল ৭টার দিকে পীরগাছা উপজেলার অন্নদানগর ইউনিয়নের খামার নয়াবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রংপুর জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম পলাশ জানান, সকাল ৭টার দিকে মাইনুদ্দীন থানায় এসে আত্মসমর্পণ করে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তার এই অপরাধের জন্য তিনি প্রাথমিক জবানবন্দিতে সর্বোচ্চ শাস্তি পেতে রাজি আছেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন।
মাইনুদ্দীনের কথার ভিত্তিতে এএসপি আরও জানান, দুই বছর ধরে মাইনুদ্দীনের স্ত্রী আয়শা বেগমের সঙ্গে একই উপজেলার মমিনবাজার জগজীবন এলাকার ফারুকের (২৬) সঙ্গে পরকীয়ার কারণে তাদের সংসারে পারিবারিক কলহ চলছিল। ঘটনার দিন (৩ জুন শুক্রবার) রাত অনুমানিক তিনটার দিকে নিজ শয়নকক্ষে স্ত্রী আয়শা বেগমকে শাবল ও কুড়াল দিয়ে পেটে শরীরের আঘাত করার পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন মাইনুদ্দীন। এরপর মরদেহ ঘরের মধ্যে ফেলে রেখে সকাল ৭টার দিকে স্ত্রী হত্যার কথা জানিয়ে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন মাইনুদ্দীন।
বশির উদ্দীনের ছেলে মাইনুদ্দীনের গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলায়। ব্যবসায়িক তাগিদে তিনি পীরগাছায় বসবাস করে আসছেন। সম্প্রতি তারা ঢাকায় গিয়ে বসবাস শুরু করেন। গত ২৯ মে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন। এরই মধ্যভাগে গত বৃহস্পতিবার আয়শা বেগমকে ফোন করেন ফারুক। এ নিয়ে মাইনুদ্দীন ও আয়শার মধ্যে রাগারাগি হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুই বছর ধরে ফারুক ও আয়শার মধ্যে পরকীয়ার সম্পর্ক থাকার কারণে স্থানীয় লোকজন তাদের হাতেনাতে ধরে একবার থানায় সোপর্দ করেছিল। এ ঘটনার পর মাইনুদ্দীনের স্ত্রী আয়শাকে অনৈতিক কার্যকলাপ থেকে সরে আসার জন্য বুঝিয়ে আসছিলেন। স্ত্রীকে হত্যার পর নিজের ইচ্ছায় থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন হত্যাকারী স্বামী মাইনুদ্দীন।
পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুরেশ চন্দ্র বলেন, এটি পরকীয়ার কারণে হত্যা নাকি অন্য কারণে তদন্তের পর জানা যাবে। ঘটনাস্থলে সিআইডির টিম আসবে। সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।