লক্ষ্মীপুরে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাচ্ছেন তিনবারের ইউপি চেয়ারম্যান
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) তিনবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজ উল্যা। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই মেয়াদে সভাপতিও ছিলেন। এরপরও ঝরাজীর্ণ টিনের ঘরে বসবাস করে আসছেন। তাই তাকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে একটি ঘর দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আজ রোববার বিকেলে দত্তপাড়া ইউনিয়নের নরসিংহপুর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান মুক্তিযোদ্ধা মফিজ উল্যার কাছে ঘরের নকশা হস্তান্তর করেন।
এ সময় চিকিৎসার জন্য মফিজ উল্যাকে ২৫ হাজার টাকাও দেওয়া হয়েছে। আগামী দু-একদিনের মধ্যে ঘরের কাজ শুরু হবে। এ ছাড়া তার বাড়ির সামনের কাঁচা রাস্তাটি সলিং করে দেওয়ার কথাও জানানো হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনির হোসেন চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ উল্যা মনা বাকশাল, মো. নুরুজ্জামান, দত্তপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহছানুল কবির রিপন, আবদুল ওয়াহেদ মানিক প্রমুখ।
জানা গেছে, চেয়ারম্যান থাকাকালীন মুক্তিযোদ্ধা মফিজ উল্যার সততার ঘটনাগুলো আজও মানুষের মুখে মুখে রয়েছে। তিনবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে তিনি জনগণের কল্যাণে কাজ করেছেন। এখন তার ৭৮ বছর বয়স। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। ঝরাজীর্ণ একটি ঘরে তিনি বসবাস করছেন। তার তিন ছেলে ও চার মেয়ে। সন্তানদের আর্থিক অবস্থাও তেমন ভালো নয়। স্ত্রীকে নিয়ে তিনি মুক্তিযোদ্ধার ভাতা দিয়ে কোনো রকমে দিনাতিপাত করছেন। বৃদ্ধ বয়সের নানা রোগে আক্রান্ত হলেও এখন প্রয়োজনীয় ওষুধ কেনার সামর্থ্যও নেই তার। এতে তিনি প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি চিঠি লেখলে ফেসবুকে তা ছড়িয়ে পড়ে। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর তার লেখা সেই খোলা চিঠিটি লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানের নজরে পড়ে।
মফিজ উল্যা বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের দায়িত্বে থাকাকালীন বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে জনগণের কল্যাণে কাজ করেছি। নিজের জন্য অট্টালিকা কিংবা সম্পদ গড়ার চিন্তাভাবনা কখনোই আমার মধ্যে কাজ করেনি। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে আমি অসহায় হয়ে পড়েছি। বঙ্গবন্ধুর কন্যার উপহার ঘর ও যারা এটি দেওয়া জন্য এসেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান বলেন, মফিজ উল্যা একজন সৎ জনপ্রতিনিধির উদাহরণ। দীর্ঘদিনের জনপ্রতিনিধি হয়েও তিনি এখন জীর্ণ ঘরে বসবাস করছেন। এটি খুবই বেদনাদায়ক। যত দিন বাঁচেন, তত দিন যেন একটি ভালো ঘরে থাকতে পারেন, এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে তাকে একটি ঘর দেওয়া হচ্ছে।