সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গাছ কাটা নিয়ে রিট খারিজ
ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণের জন্য গাছ কাটা নিয়ে করা রিট পর্যবেক্ষণসহ সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ। এর আগে ১৩ সেপ্টেম্বর এ রিটের ওপর শুনানি শেষে আজ ১৯ সেপ্টেম্বর রোববার দিন ধার্য করেছিলেন হাইকোর্ট।
ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মূল নকশার সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ স্থাপনা উচ্ছেদ, উদ্যান সংরক্ষণ এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এই উদ্যানকে মূলরূপে রাখার নির্দেশনা চেয়ে গত ৯ মে হাইকোর্টে পরিবেশবাদী ছয়টি সংগঠন ও এক ব্যক্তি রিট করেন।
রিট আবেদনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণের (তৃতীয় প্রকল্প) নামে পুরাতন ও ঐতিহাসিক গাছ কেটে প্রকল্প নির্মাণ কেন অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, মূল নকশার বাইরে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, এরই মধ্যে যেসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে তা কেন অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং ঢাকা মহানগরের মাস্টারপ্ল্যান যেভাবে রয়েছে সেভাবে উদ্যান সংরক্ষণ করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না সেই মর্মে রুল জারির আবেদন করা হয়েছে।
একই সঙ্গে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণের জন্য গাছ কাটা বন্ধ রাখার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি যেসব গাছ কাটা হয়েছে, তার পরিবর্তে তিন গুণ গাছ লাগানোর নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
রিট আবেদনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সচিব, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধান বন সংরক্ষক, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীকে বিবাদী করা হয়।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফরমস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), নিজেরা করি, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এবং স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন এ রিট করেন।
শুনানিতে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ বলেন, এটা সরকারের একটি মেগা প্রকল্প। পরিবেশ রক্ষা করেই এটা বাস্তবায়ন করছে সরকার। তবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কোনো অবকাঠামো করা হচ্ছে না।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, সেখানে কীভাবে এবং কতটি গাছ লাগাতে হবে সে বিষয়ে সরকার ৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছিল। এই কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই সব হচ্ছে। ২০০৯ সালে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করছে সরকার। এখানে পরিবেশ ধ্বংস করে কিছু করা হচ্ছে না।