হলি আর্টিজানে হামলার বিচারকাজ শেষ, রায় ২৭ নভেম্বর

রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলার মামলায় আট আসামির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার জন্য আগামী ২৭ নভেম্বর দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত।
আজ রোববার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান এ দিন নির্ধারণ করেন।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি গোলাম সারওয়ার খান (জাকির) বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আজ আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি মধ্য দিয়ে মামলার বিচারকাজ শেষ হয়েছে। পরে বিচারক আলোচিত এই মামলাটির রায়ের জন্য আগামী ২৭ নভেম্বর দিন নির্ধারণ করেছেন।’
এদিকে আজ এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ উপলক্ষে কারাগারে থাকা ছয় জঙ্গিকে হাজির করে পুলিশ। তাঁরা হলেন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, রাশেদুল ইসলাম ওরফে র্যাশ, সোহেল মাহফুজ, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান ও হাদিসুর রহমান সাগর।
গত বছরের ২৬ নভেম্বর আলোচিত মামলাটির বিচার শুরুর নির্দেশ দেন একই আদালত।
গত বছরের ২৩ জুলাই ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবীর গুলশান হামলা মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিমকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়। পরে অবশ্য হাসনাত করিমকে অব্যাহতি দেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েস।
এ মামলায় অভিযোগপত্রে ২১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে আটজন আসামি বিভিন্ন অভিযানে এবং পাঁচজন হলি আর্টিজানে অভিযানের সময় নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া জীবিত আটজনের মধ্যে ছয়জন কারাগারে এবং বাকি দুজন পলাতক। পলাতক দুই আসামি হলেন শহীদুল ইসলাম খালেদ ও মামুনুর রশিদ রিপন।
অভিযানে নিহত পাঁচ জঙ্গি হলেন রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, মীর সামেহ মোবাশ্বের, নিবরাস ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল ও খায়রুল ইসলাম ওরফে পায়েল।
এ ছাড়া বিভিন্ন ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযানে নিহত আটজন হলেন—তামীম আহমেদ চৌধুরী, নুরুল ইসলাম মারজান, তানভীর কাদেরী, মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম ওরফে মুরাদ, রায়হান কবির তারেক, সারোয়ান জাহান মানিক, বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট ও মিজানুর রহমান ওরফে ছোট মিজান।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাত পৌনে ৯টার দিকে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলা চালায় বন্দুকধারীরা। হামলার পর রাতেই তাঁরা ২০ জনকে হত্যা করেন।
সেদিনই উদ্ধার অভিযানের সময় বন্দুকধারীদের বোমার আঘাতে নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা। পরের দিন সকালে সেনা কমান্ডোদের অভিযানে নিহত হন পাঁচ হামলাকারী। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরেকজনের মৃত্যু হয়।
জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায় স্বীকার করে। সংগঠনটির মুখপত্র ‘আমাক’ হামলাকারীদের ছবি প্রকাশ করে বলে জানায় জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ‘সাইট ইন্টেলিজেন্স’।
এ ঘটনায় গুলশান থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে পুলিশ। মামলার পর নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁকে দুই দফা রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়।
অন্যদিকে, এ মামলায় কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানা থেকে আটক রাকিবুল হাসান রিগ্যানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তিনি এ মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।