হেনস্তা করতে ১১ লাখ টাকা দাবি করছে ঢাবি : সামিয়া রহমান

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সামিয়া রহমানের কাছে ১১ লাখ ৪১ হাজার ২১৬ টাকা পাওনা দাবি করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষ। তবে, হেনস্তা করতেই এমন চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে দাবি সামিয়া রহমানের। আজ বুধবার এমন দাবি করেন তিনি।
টাকা পরিশোধ না করলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিয়া রহমানকে পদাবনতির আদেশ অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাঁকে সব সুযোগ-সুবিধাসহ পদ ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
গত বছরের ৩১ আগস্ট হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন সামিয়া রহমান। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুল দেন। ঢাবির সিনেটের সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সামিয়া রহমানের আবেদনের শুনানি শেষে হাইকোর্ট এ আদেশ দেন।
২০১৬ সালের ডিসেম্বরে সামিয়া রহমান ও মারজানের যৌথভাবে লেখা ‘এ নিউ ডাইমেনশন অব কলোনিয়ালিজম অ্যান্ড পপ কালচার : এ কেস স্ট্যাডি অব দ্য কালচারাল ইমপেরিয়ালিজম’ শিরোনামের আট পৃষ্ঠার একটি গবেষণা প্রবন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সোশ্যাল সায়েন্স রিভিউ’ জার্নালে প্রকাশ হয়। এটি ১৯৮২ সালের শিকাগো ইউনিভার্সিটির জার্নাল ‘ক্রিটিক্যাল ইনকোয়ারি’তে প্রকাশিত ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকোর ‘দ্য সাবজেক্ট অ্যান্ড পাওয়ার’ নামের একটি নিবন্ধ থেকে প্রায় পাঁচ পৃষ্ঠা হুবহু নকল বলে অভিযোগ ওঠে।

২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে এক লিখিত অভিযোগে মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এ চুরির কথা জানিয়েছিল ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস।
শুধু মিশেল ফুকোই নন, বুদ্ধিজীবী এডওয়ার্ড সাঈদের ‘কালচার অ্যান্ড ইমপেরিয়ালিজম’ গ্রন্থের পাতার পর পাতাও সামিয়া ও মারজান হুবহু নকল করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরিন আহমেদকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট। দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে গতবছর ওই কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়। ওই প্রতিবেদনে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় গত ২৯ অক্টোবর তাদের একাডেমিক অপরাধের শাস্তির সুপারিশ করতে আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহকে আহ্বায়ক করে একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ট্রাইব্যুনাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে শাস্তির বিষয়ে সুপারিশ জমা দিলে সিন্ডিকেটের সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।