দুদিনের পরিবহন ধর্মঘট, বিজিবি সদস্যদের প্রত্যাহার
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2017/01/06/photo-1483718179.jpg)
শ্রীমঙ্গল উপজেলায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং পরিবহন শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলা সংঘর্ষের ঘটনায় মৌলভীবাজার জেলায় দুদিনের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। এর ফলে আগামীকাল শনিবার এবং পরদিন রোববার জেলার কোথাও বাস-ট্রাক-সিএনজি-ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চলাচল করবে না।
অপরদিকে আজ শুক্রবার বিজিবির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে কয়েকজনকে শ্রীমঙ্গল থেকে সরাইল রিজিয়নে প্রত্যাহার (ক্লোজ) করে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে আজকে ধর্মঘটের কারণে শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে আসা পর্যটক ও সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শ্রীমঙ্গল শহরের ভানুগাছ রোডে গাড়ি রাখা (পার্কিং) নিয়ে এক বিজিবির সদস্যের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় স্থানীয় এক পরিবহন শ্রমিক ওই বিজিবি সদস্যকে লাঞ্ছিত করেন। এ খবর বিজিবির শ্রীমঙ্গল সদর দপ্তরে পৌঁছালে বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয় ব্যবসায়ী, পরিবহন শ্রমিক ও সাধারণ মানুষকে মারধর করেন।
পরে পরিবহন শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা বিজিবি সদস্যদের ওপর পাল্টা হামলা চালালে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় প্রায় ১০০ গাড়ি ও ৫০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষে আটজন গুলিবিদ্ধসহ প্রায় ৫০ জন আহত হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে রাতে ব্যবসায়ীরা শ্রীমঙ্গল চৌমুহনী চত্বরে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানান এবং আজকে ধর্মঘটের ডাক দেন।
আজও শ্রীমঙ্গল শহরের বিভন্ন সড়কে ধর্মঘটের সমর্থনে পরিবহন শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ মিছিল ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানান। বিকেলে শ্রীমঙ্গল চৌমোহনায় পরিবহন শ্রমিকরা সমাবেশ করেন। সেখানে নেতারা বিচার বিভাগীয় সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিকে প্রত্যাহার ও শাস্তি নিশ্চিত করাসহ ক্ষতিপূরণের দাবি জানান। সেখান থেকেই মৌলভীবাজার পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সঞ্জিত কুমার দেব এবং শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শেখ লুৎফুর রহমানসহ অন্য নেতারা শনি ও রোববার সারা জেলায় দুই দিনের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। দাবি না মানলে সিলেট বিভাগে কর্মসূচি দেওয়া হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
এদিকে এ ঘটনার তদন্তে বিজিবি রিওজন পর্যায়ের চার সদস্যবিশিষ্ট একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ বিকেলে বিজিবির তদন্তকারী দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবহন শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন।
অপরদিকে হামলার ঘটনায় জেলা প্রশাসন অতিরিক্ত জেলা হাকিমকে প্রধান করে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিকেলে বিটিআরআই রেস্টহাউসে জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও বিজিবি কর্মকর্তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষ্যে বৈঠকে বসেন। এ সময় জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. শাহ জালাল, বিজিবির সরাইল রিওজন কমান্ডার, সংসদ সদস্য আবদুস শহীদ, প্রশাসনের কর্মকর্তা, শ্রমিক ও ব্যবসায়ী নেতারা ছাড়াও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।