সীমাহীন কষ্টে শাহপরীর দ্বীপের ক্ষতিগ্রস্তরা
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2017/06/01/photo-1496327761.jpg)
সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র আঘাতে ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দারা।
আর্থিক অনটনের কারণে ঝড়ে উড়ে যাওয়া বাড়ির ছাউনি এবং বাড়ির ওপর পড়ে থাকা বড় গাছগুলোও সরাতে পারেনি ক্ষতিগ্রস্ত বেশির ভাগ মানুষ। দ্বীপের বেশির ভাগ বাসিন্দার জীবনে তাই মোরার ক্ষত এখনো দগদগে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির সুযোগে অনেক অসাধু ব্যবসায়ী তাদের পণ্যের মূল্য অস্বাভাবিক মাত্রায় বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতে শাহপরীর দ্বীপের কমবেশি প্রায় সব বাড়িঘরেরই ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ঘোলারপাড়া, দক্ষিণপাড়া, মাঝেরপাড়া, জালিয়াপাড়া ও ক্যাম্পপাড়ার বাসিন্দারা।
জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা জুহুরা খাতুন জানান, ঘূর্ণিঝড় তাঁর সবকিছু কেড়ে নিয়েছে। নিজের বসতঘরটি মিশে গেছে মাটিতে। সংসারে যেখানে নুন আনতে পান্তা ফুরায় সেখানে সবকিছু ঠিকঠাক করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা তাঁর জন্য খুবই কঠিন। এখন পর্যন্ত কোনো সহায়তা পাননি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
প্রায় একই অবস্থা জালিয়াপাড়ার এখলাস মিয়া, আয়াতুল্লাহ, মো. ইলিয়াছ, হাসিনা বেগমসহ শতাধিক মানুষের।
এ বিষয়ে সাবেক ইউপি সদস্য আবদুস সালাম বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে শাহপরীর দ্বীপে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা জালিয়াপাড়া ও ক্যাম্পপাড়া। এদের প্রায় সবাই জেলে পরিবার। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে দ্রুত ত্রাণ বিতরণ প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মাঝেরপাড়ার বাসিন্দা মকতুল হোসেন জানান, এর আগে ঘূর্ণিঝড় কোমেনের পরও কোনো সহায়তা পাননি। আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে ধার করে কোনোমতে ঘরবাড়ি সংস্কার করেছিলেন। আর এবারের ঘূর্ণিঝড় তাঁর বাড়ির কিছুই অবশিষ্ট রাখেনি।
সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রেজাউল করিম রেজু জানান, ঘূর্ণিঝড়ে পুরো শাহপরীর দ্বীপে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হিসেবে প্রয়োজনীয় ত্রাণ সরবরাহ ও গৃহহীনদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফজলুল হক জানান, ঘূর্ণিঝড় মোরায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর খোঁজ-খবর নিচ্ছেন তাঁরা। সরকারের পক্ষ থেকে যেকোনো ধরনের সাহায্য এলে দ্রুততম সময়ে এসব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হবে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী বিচ্ছিন্ন জনপদ শাহপরীর দ্বীপে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য ব্যাপক হারে বেড়েছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দুর্যোগকে পুঁজি করে তাদের ব্যবসায়িক পণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি করেছে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় তরি-তরকারি, তেল, ডাল, মরিচ, বাঁশ, টিন ইত্যাদি। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দুর্ভোগ আরো বাড়ছে।