সাগরে অজানা জাহাজ, লুটপাট, কিছু উদ্ধার

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার সোনাদিয়া সমুদ্র উপকূলের ডুবোচরে আটকা পড়া জাহাজে কয়েকদিন ধরে লুটপাট চালায় স্থানীয় লোকজন।
জানা গেছে, গত সোমবার ভোরে স্থানীয় লোকজন জাহাজটি দেখতে পায়। তবে কোনো লোকজনকে দেখা যায়নি।
আজ বিকেল ৩টার দিকে পূর্বপাড়া ও পশ্চিমপাড়ার লোকজন জাহাজে গিয়ে লুটপাট চালায়। বেশ জিনিসপত্র নিয়ে যায়। দুই পাড়ার লোকদের মধ্যে ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে সংঘর্ষ হয়। উভয় পক্ষের মধ্যে গুলির ঘটনাও ঘটে। এতে কমপক্ষে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয় বলে জানা গেছে।এদিকে, জলদস্যু আনজু তার বাহিনী নিয়ে জাহাজ লক্ষ্য করে গুলি করলে জাহাজে থাকা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে আগুন ধরে যায়। তবে বৃষ্টিপাতে আগুন কোনোরকমে নিয়ন্ত্রণে
আসে বলে জানা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, বৈরী আবহাওয়ার তোড়ে বঙ্গোপসাগরের গভীর অঞ্চল থেকে জাহাজটি সোনাদিয়ার চরে এসে আটকে যায়। এটি তীরে ভেড়ার খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন জাহাজটিতে উঠে লুটপাট চালায়। যে যার মতো তেলভর্তি ড্রাম, লাইফ জ্যাকেট ও অন্যান্য মালামাল বাড়িতে নিয়ে যায়।
এদিকে, জাহাজে লুটপাটের খবরে মহেশখালী থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ফররুখ আহমদ মিনহাজের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সোনাদিয়ায় জাহাজের লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারে বাড়ি বাড়ি অভিযান চালায়। এ সময় পাঁচটি ফ্রিজ, ২০টি লাইফ জ্যাকেট, পাঁচটি তৈলের ব্যারেল, পাঁচটি চেয়ার উদ্ধার করে।
মহেশখালী থানার এসআই মিনহাজ বলেন, জাহাজে উঠে দেখা যায় এতে ক্রু বা অন্য কোনো লোকজন নেই। মনে হচ্ছে এটি বাণিজ্যিক পণ্যবাহী জাহাজ। জাহাজে বেশ কিছু তেলের ড্রাম ও লাইফ জ্যাকেট রয়েছে। তিনি জানান, আরো বেশ কিছু পণ্য লুট করেছে স্থানীয় লোকজন। এসব উদ্ধারে ওই এলাকায় বাড়ি বাড়ি অভিযান চালানো হচ্ছে। লুট হওয়া বেশ কিছু তেল ও অন্যান্য পণ্য উদ্ধার করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
এসআই মিনহাজ আরো বলেন, জাহাজের গায়ে লেখা ও অন্যান্য সরঞ্জাম দেখে মনে হচ্ছে এটি কোরিয়ার জাহাজ। এটি এখন পুলিশের জিম্মায় রয়েছে। ক্রু ও লোকজন না থাকায় জাহাজটি কোনো জাহাজভাঙার এলাকা থেকে চলে এসেছে বলে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে।
কুতুবজোম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন খোকন বলেন, সম্প্রতি বয়ে যাওয়া বৈরী আবহাওয়ায় পড়ে জাহাজটি ভেসে এসে সোনাদিয়ার চরে আটকে যায়। জাহাজটি সুরক্ষার চেষ্টা চালানোর পরও কিছু লোক জাহাজে লুটপাট চালায়। বর্তমানে জাহাজটি প্রশাসন জিম্মায় নিয়েছে। তাদের মাধ্যমে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, জাহাজে লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে পুলিশ যাওয়ার পর যারা লুটপাট চালিয়েছে, তাদের বাড়ি সোনাদিয়ায় না। তিনি বলেন, ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।