টেকনাফে ‘হাকিম ডাকাতের আস্তানা’ থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় একটি ‘আস্তানায়’ অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের তথ্য জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এ সময় সেখান থেকে দুজনকে আটক করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে এ অভিযান চালানো হয় বলে জানায় র্যাব। এ সময় মোহাম্মদ ফরিদ ও শামসুল আলম নামের মিয়ানমারের দুই নাগরিককে আটক করা হয়। পুলিশের এই এলিট ফোর্সের দাবি, আবদুল হাকিম নামের এক রোহিঙ্গা নাগরিক এই ‘আস্তানা’ চালান। তিনি পেশায় একজন ডাকাত। আটকরা আবদুল হাকিমের সহযোগী।
র্যাব-৭-এর কক্সবাজার ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর রুহুল আমিন এসব তথ্য জানিয়েছেন।
মেজর রুহুল আমিনের ভাষ্য, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার সন্ধ্যায় টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসংলগ্ন পাহাড়ে অভিযান চালানো হয়। এ সময় রোহিঙ্গা ডাকাত আবদুল হাকিমের দুই সহযোগী ফরিদ ও শামসুলকে আটক করা হয়। পরে তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আস্তানা থেকে ১৫টি ওয়ান শুটার গান, দুটি দেশি পিস্তল ও ৪৩৭টি গুলি উদ্ধার করা হয়।
এর আগে টেকনাফ থেকে আবদুল হাকিমের শ্যালককে অস্ত্রসহ আটক করেছিল র্যাব।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রে জানা যায়, টেকনাফের পাহাড়ে অবস্থান নিয়ে হত্যা, অপহরণ, ডাকাতি, ইয়াবা ব্যবসাসহ নানা অপকর্ম করে আসছে আবদুল হাকিম বাহিনী। বছর তিনেক আগে পুলিশের সোর্স মুন্ডি সেলিম হত্যাকাণ্ডের পর প্রথম আলোচনায় আসেন হাকিম ডাকাত। এর পর টেকনাফ সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডেও এই আবদুল হাকিমের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া অপহরণ, গুমের সঙ্গে জড়িত তিনি। তাঁর ভয়ে পল্লানপাড়া ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসংলগ্ন এলাকার অনেক পরিবার এখনো ঘরছাড়া বলে জানা গেছে।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাঈন উদ্দিন জানান, আবদুল হাকিমের বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণ, গুমসহ বিভ্ন্নি অভিযোগে মামলা আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মিয়ানমারের রাশিদং থানার বড় ছড়া গ্রামের জানি আলীর ছেলে আবদুল হাকিম। প্রায় নয় বছর আগে মিয়ানমার পুলিশ তাঁর এক ভাইকে সেখানে মেরে ফেলে। এর পর তিনি সেখান থেকে শাহপরীর দ্বীপে পালিয়ে যান। সেখানে বাজারপাড়ার আবদুল জলিলের বাড়িতে বসবাস শুরু করেন হাকিম। সে সময় জলিলের নেতৃত্বেই গরু চুরি ও ডাকাতি করতেন আবদুল হাকিম। একদিন চুরির সময় ধরা পড়লে স্থানীয় জনতা তাঁকে গণপিটুনি দেয়। এর পর তিনি সেখান থেকে টেকনাফ পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের পুরান পল্লানপাড়ায় বসতি স্থাপন করেন। গড়ে তোলেন নিজস্ব বাহিনী।