আরো ৩৭৫ রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠাল বিজিবি

রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার মধ্যে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় ৩৭৫ রোহিঙ্গা মুসলিমকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিজিবি-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট এস এম আরিফ হোসেন জানান, গতকাল বুধবার রাতে শাহপরীর দ্বীপের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে ৩৭৫ রোহিঙ্গা মুসলিম নাগরিককে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
এদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের বিভিন্ন শূন্যরেখায় (নো-ম্যানস ল্যান্ড) শত শত রোহিঙ্গা পরিবার অবস্থান করছে। তাঁরা খাবার ও পানীয় জলের সংকটে ভুগছেন।
মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইন রাজ্যে একসঙ্গে ২৪টি পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে।
এরপর ‘সন্ত্রাসীদের’ সঙ্গে দেশটির নিরাপত্তাকর্মীদের সংঘর্ষে প্রায় একশজন নিহত হন। এর মধ্যে ১২ নিরাপত্তাকর্মী ও বাকিদের ‘সন্ত্রাসী’ বলে দাবি করেছে মিয়ানমারে রাষ্ট্রীয় পরামর্শদাতার কার্যালয়। এর পর থেকেই হাজার হাজার মানুষ মিয়ানমার থেকে নদী, সমুদ্র ও স্থলপথে বাংলাদেশে আসা শুরু করে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) হিসাব অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে প্রায় ১৮ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। যদিও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সীমান্ত দিয়ে কাউকে অনুপ্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
এর আগে গত বছরের ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকায় দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ক্যাম্পে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য মারা যান। অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুটের ঘটনা ঘটে।
জাতিগত দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে দেশটির উত্তর-পূর্ব রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। জাতিগতভাবে নির্মূল করতে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের গ্রামে আগুন দিয়ে বসতবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়াসহ গণহত্যা ও গণধর্ষণ চালায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
সহিংসতার শিকার হয়ে গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
এর আগে ২০১২ সালের জুনেও মিয়ানমারে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় আক্রান্ত রোহিঙ্গারা দলে দলে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালায়। ওই সময় সরকার অনুপ্রবেশ ঠেকাতে শক্ত অবস্থান নেয়। যার ফলে ওই সময়ে সাড়ে পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা পুশব্যাক করা হয়।