২৪ ঘণ্টায় সাড়ে ৪ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগে গত ২৪ ঘণ্টায় চার হাজার ৫৩৮ জন রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক এস এম আরিফুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
গত বুধবার শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছিল মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সহিংসতার পর সেখান থেকে পালিয়ে প্রায় ১৮ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম নর-নারী ও শিশু বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এরপর বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা দাবি করেছেন, গত এক সপ্তাহে প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম নর-নারী ও শিশু বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
কত সংখ্যক রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে এ প্রশ্নের জবাবে এস এম আরিফুল ইসলাম সঠিক সংখ্যাটি তাঁর জানা নেই বলে দাবি করেন। এ ছাড়া সীমান্তে আরো হাজার হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
গত ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা শুরুর পর শত শত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ পালিয়ে বাংলাদেশের দিকে আসতে থাকে। সীমান্তে তাদের বাধা দেয় বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এক সপ্তাহে শত শত রোহিঙ্গাকে পুশব্যাক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
পালিয়ে আসা নারী-পুরুষদের অনেকেই সীমান্ত এলাকায় বসে আছে। নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে অসহায় জীবনযাপন করছে তারা।
মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইন রাজ্যে একসঙ্গে ২৪টি পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে।
গত বছরের ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকায় দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ক্যাম্পে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য মারা যান। অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুটের ঘটনা ঘটে।
জাতিগত দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে দেশটির উত্তর-পূর্ব রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। জাতিগতভাবে নির্মূল করতে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের গ্রামে আগুন দিয়ে বসতবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়াসহ গণহত্যা ও গণধর্ষণ চালায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
সহিংসতার শিকার হয়ে গত বছরের অক্টোবর থেকে এক পর্যন্ত ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
এর আগে ২০১২ সালের জুনেও মিয়ানমারে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় আক্রান্ত রোহিঙ্গারা দলে দলে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালায়। ওই সময় সরকার অনুপ্রবেশ ঠেকাতে শক্ত অবস্থান নেয়। যার ফলে ওই সময়ে সাড়ে পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা পুশব্যাক করা হয়।
ক্যাপশন : বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় সীমান্তে অবস্থানকারী রোহিঙ্গা নারী পুরুষ। ছবি : সংগৃহীত