শ্রমিক আন্দোলনে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা বাড়ানোর আহ্বান
শ্রমিকদের দাবিদাওয়া আদায়ে মিছিল-সমাবেশের পাশাপাশি বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা বাড়ানো জরুরি বলে মনে করছেন দেশের ট্রেড ইউনিয়নের নেতারা।
নেতারা বলেন, শ্রমিক আন্দোলনকে হতে হবে মুক্ত। এর ওপরে শ্রমিকদেরই পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে, নয়তো সে আন্দোলন শ্রমিকদের স্বার্থের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
‘মজুরি মানুষ সংগ্রাম’ বইয়ের প্রকাশনা উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা আজ শনিবার এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ শ্রম ইনস্টিটিউট (বাশি) আয়োজিত ওই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির ট্রাস্টি অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম। আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি শহীদুল্লাহ চৌধুরী, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, জাতীয় গণতান্ত্রিক শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শামীম ইমাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শামীম ইমাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শামীম ইমাম, গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির আহ্বায়ক তাসলিমা আখতার, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের নেতা শহীদুল ইসলাম প্রমুখ।
সভার শুরুতে সংগঠনের কার্যবিবরণী পেশ করেন বাশির অন্যতম ট্রাস্টি মুর্শেদ আলী।
আবদুস সালাম বলেন, শ্রমিক আন্দোলনে তিন ধরনের হস্তক্ষেপ হয়। প্রথমত মালিকপক্ষ, দ্বিতীয়ত সরকার এবং তৃতীয়ত শ্রমিকশ্রেণির রাজনৈতিক নেতৃত্বের দাবিদার কিছু সংগঠন বাংলাদেশের শ্রমিক আন্দোলনকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। ফলে মুক্তচিন্তার শক্তিশালী সংগঠন গড়ে ওঠেনি।
শহীদুল্লাহ চৌধুরী বলেন, এখন মালিকরা আগের চেয়ে অনেক পরিপক্ব। তাঁদের সাথে লড়ার জন্য ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের নেতৃত্বকেও অনেক দক্ষ হতে হবে। শ্রমিক আন্দোলনে জয়লাভের জন্য সময়োচিত কৌশল গ্রহণের ওপরে জোরারোপ করেন এ প্রবীণ নেতা।
রাজেকুজ্জামান রতন তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশ শ্রম ইনস্টিটিউশনকে (বাশি) বইটি প্রকাশের জন্য শুভেচ্ছা জানান। তিনি ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
জাতীয় গণতান্ত্রিক শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শামীম ইমাম বলেন, কেবল মজুরি, কর্মপরিবেশের দাবি আদায়ের আন্দোলন করাই যথেষ্ট নয়; শ্রমিকদের মুক্তির জন্য উৎপাদানের উপকরণের ওপরে তাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ কায়েম হওয়া দরকার।
গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা ফিরোজ আহমেদ বাংলাদেশের শ্রমিক আন্দোলনের বর্তমান অবস্থানকে ব্যাখ্যা করেন। বাংলাদেশের সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও শ্রমিকদের দুরবস্থার জন্য শ্রমিক আন্দোলনের দুর্বলতাকে দায়ী করেন তিনি।
গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির আহ্বায়ক তাসলিমা আখতার শ্রমিক আন্দোলনের বিকাশে শ্রমিক সংগঠনগুলোর একতার ওপরে গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, সংগঠনগুলোর যতক্ষণ ন্যূনতম দাবিতেও ঐক্যবদ্ধ না হবে, ততক্ষণ বিজয়ী হওয়া অসম্ভব।
গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের নেতা শহীদুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক আন্দোলনের বিকাশে সংগঠনগুলোকে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে বিকশিত হতে হবে। তোবা গার্মেন্টসের আন্দোলন বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, শ্রমিকদের সংগঠিত করাই এখনকার সময়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ।