টেকনাফে ছুরিকাঘাতে বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্র খুন

কক্সবাজারের টেকনাফে ছুরিকাঘাতে মো. দেলোয়ার হোসেন (২০) নামের এক বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্র খুন হয়েছে। তিনি টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মহেষখালীয়াপাড়ার মৃত আবদুস সালামের ছেলে। পড়াশুনা করতেন কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এলএলবি কোর্সে।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মহেষখালীয়াপাড়ায় নিজ বাড়ির অদূরে প্রধান সড়কের পাশে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। এ সময় দেলোয়ারের চিৎকারে আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসী এসে তাঁকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
টেকনাফে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. জাকারিয়া জানান, হাসপাতালে আনার আগেই দেলোয়ার হোসেনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর শরীরের পেছনে বাম পাশে গভীর ক্ষত রয়েছে বলে জানান তিনি।
নিহতের বড় ভাই তজিল আহমদ জানান, দেলোয়ার তাঁকে মোবাইল করে জানান, ভাই আমি মারা যাচ্ছি। এ কথা শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ছুরিকাহত ভাইকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত এলাকার তিন যুবকের নাম জানতে পেরেছেন বলে জানান তিনি।
নিহত দেলোয়ার কক্সবাজারে অবস্থান করতেন এবং মাঝে মধ্যেবাড়ি আসতেন। দুইদিন আগে তিনি বাড়িতে আসেন।
তজিল আহমদ আরো জানান, কিছুদিন আগে এলাকার বর্তমান ইউপি সদস্য হামিদের সঙ্গে তাঁর ভগ্নিপতি আবুল বশরের দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এতে উভয়পক্ষে তিনজন মারাত্মক জখম হয়ে দুজন পঙ্গুত্ব বরণ করেন।
আবুল বশর ভগ্নিপতি হলেও ওই ঘটনার সঙ্গে তারা জড়িত ছিল না দাবি করে তজিল বলেন, ‘আমার ভাই পড়ালেখা করার কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে।’
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইন উদ্দিন খান জানান, তাঁর লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ঘাতকদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।
গত আগস্ট মাসের শেষের দিকে একটি ছাগল চুরির বিচারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মহেষখালীয়াপাড়ায় আবুল বশর পক্ষের হামলায় ইউপি সদস্য হামিদের এক পায়ের নিম্নাংশ কেটে ফেলতে হয়। পরে ওই ঘটনার জের ধরে কয়েকদিন আগে আবুল বশরের ওপর হামলা চালায় প্রতিপক্ষ। এর কিছুক্ষণের মধ্যে হামিদ পক্ষের নুরুল ইসলাম মেম্বারের ওপর গুলি বর্ষণ করা হয়। ওই ঘটনার জের ধরে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্র দেলোয়ার খুন হয়েছেন বলে ধারণা করছে এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী আরো জানায়, বর্তমানে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মহেষখালীয়াপাড়া এলাকাটি সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত হয়েছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িতরা আবার ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত বলে জানায় তারা।