‘ঢাকায় রোগীর তুলনায় চিকিৎসক বেশি এমন হাসপাতালও আছে’
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের গ্রামে গিয়ে সেবা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, রাজধানী ঢাকায় প্রয়োজনের তুলনায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সংখ্যা বেশি। ঢাকায় এমন হাসপাতালও আছে যেখানে রোগীর তুলনায় চিকিৎসক বেশি। অথচ দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সাধারণ মানুষ হাতের নাগালে বিশেষজ্ঞদের পান না।
যদি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা স্বেচ্ছায় ঢাকার বাইরে বদলি হয়ে যান তবে জেলা হাসপাতালগুলো সমৃদ্ধ হতো, দরিদ্র মানুষের কাছে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ পরিপূর্ণতা পেত বলেও মন্তব্য করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
আজ শনিবার ঢাকায় বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জন্স-বিসিপিএস মিলনায়তনে ২০১৫ সালের জুলাই সেশনে ফেলোশিপ অব কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জন্স-এফসিপিএস এবং এমসিপিএস পাস করা চিকিৎসকদের মাঝে সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। বিসিপিএস সভাপতি অধ্যাপক ডা. সানোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠানের সহসভাপতি অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা পরীক্ষিৎ চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি পরীক্ষায় ন্যূনতম পাস নম্বর না কমানোর সরকারি সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে বলেন, মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে কোনো আপস করা হবে না। এ ক্ষেত্রে কোনো বিক্ষোভ বা চাপ সরকারকে পিছু হটাতে পারবে না।
সরকার বেসরকারি খাতকে সব সময় উৎসাহ জোগাতে চায় উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘কিন্তু চিকিৎসাসেবা নিয়ে কোনো ব্যবসা চলে না। এ ক্ষেত্রে ন্যূনতম মান বজায় রাখতেই হবে। যাঁরা নির্ধারিত ন্যূনতম পাস নম্বর অর্জন করতে পারেন না, তাঁরা চিকিৎসক না হয়ে কসাই হবেন। তাঁদের কোনোভাবে প্রশ্রয় দেওয়া উচিত না।’
অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ নাসিম ২০১৫ সালে এফসিপিএস ও এমসিপিএস পাস করা ২১২ জন ফেলো চিকিৎসকদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করেন। এর মধ্যে ১৮৮ জন এফসিপিএস পাস করেছেন। বিসিপিএস সভাপতি নতুন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের শপথ পাঠ করান।
বিকেলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সচিবালয়ে ‘বার্ন ইনস্টিটিউট স্থাপনের লক্ষ্যে জমি অবমুক্তকরণ’ সংক্রান্ত এক আন্তমন্ত্রণালয় সভায় সভাপতিত্বকালে রাজধানীর চানখাঁরপুলে টিবি হাসপাতালসংলগ্ন জমিতে বার্ন ইনস্টিটিউট স্থাপনের জন্য কাজ শুরু করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক সদিচ্ছা ও নির্দেশনা অনুযায়ী এই জায়গায় বার্ন ইনস্টিটিউট তৈরি করতে হবে। তিনি দ্রুত সেখানে পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করে ইনস্টিটিউট নির্মাণের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করতে নির্দেশ দেন।
সভায় জানানো হয়, রাজধানীর চানখাঁরপুলের টিবি হাসপাতাল ও এর সংলগ্ন জমি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে এবং এখানে বার্ন ইনস্টিটিউট নির্মাণে আইনগত কোনো সমস্যা নেই।
এ সময় পূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, স্বাস্থ্যসচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, পূর্তসচিব মঈনুদ্দীন আবদুল্লাহ, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার জিল্লার রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. দীন মো. নুরুল হক, ডা. সামন্ত লাল সেন, বার্ন ইউনিটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদসহ স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়, পূর্ত মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, পূর্ত বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।