টিকার আওতায় ৮১ শতাংশেরও বেশি শিশু
সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় ২০১৪ সালে এসেছে ৮১ শতাংশেরও বেশি শিশু। যা এর আগের বছরের তুলনায় এক শতাংশ বেশি। টিকা নেওয়ার কারণে দেশের ৯৩ শতাংশ নবজাতক ধনুষ্টঙ্কার থেকে রক্ষা পেয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচির কাভারেজ মূল্যায়ন জরিপের’ প্রতিবেদন প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসব তথ্য দেওয়া হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
ওই প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৪ সালে জাতীয় পর্যায়ে নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আসা শিশুর সংখ্যা গতবারের তুলনায় বেড়েছে। শিশু ও নারীদের টিকাদানের আওতা মূল্যায়নের জন্য প্রতি বছরের মতো ২০১৪ সালেও সারা দেশব্যাপী সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতা মূল্যায়ন জরিপ করা হয়। এবারের জরিপে দেখা যায় যে, ইপিআই কর্মসূচিতে উদ্দিষ্ট শিশুদের সময়সূচি মেনে সব টিকাদানের হার ছিল জাতীয় পর্যায়ে শতকরা ৮১ দশমিক ছয় শতাংশ, যা এর আগের বছর ছিল ৮০ দশমিক সাত শতাংশ। তবে প্রথম টিকা অর্থাৎ যক্ষ্মার বিরুদ্ধে টিকাদানের হার শতকরা ৯৯ দশমিক ২ শতাংশ। যথাযথ নিয়মে টিকা দেওয়ার ফলে শতকরা ৯৩ ভাগ নবজাতক ধনুষ্টঙ্কারের হাত থেকে সুরক্ষিত আছে।
প্রতিবেদনে আরো দেখা গেছে, রাজশাহী জেলায় সবচেয়ে বেশি মানুষ টিকাদান কর্মসূচির আওতায় এসেছে। রাজশাহী বিভাগে ৮৭ শতাংশ মানুষ কর্মসূচির আওতায় এসেছে। রাজশাহী জেলায় সংখ্যাটা ৯১ শতাংশ এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনে ৯০ শতাংশ। কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য রাজশাহীর পাশাপাশি বরিশাল ও খুলনা ও ফরিদপুর জেলাকে পুরস্কৃত করা হয়।
অনুষ্ঠানে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় দেশের শতভাগ শিশুকে আনার লক্ষ্যে কর্মসূচি জোরদার করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, ‘দেশের যে সব এলাকায় কাভারেজ দুর্বল সেখানে সমস্যা চিহ্নিত করে কর্মসূচি জোরদার করতে হবে। পাশাপাশি শতভাগ সাফল্য নিশ্চিত করতে ভালো কাজ হচ্ছে এমন জায়গাতেও কার্যক্রমকে আরো শক্তিশালী করতে হবে।’
মোহাম্মদ নাসিম জেলা সিভিল সার্জন ও বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকদেরকে নিয়মিত মাঠ পর্যায়ের হাসপাতাল পরিদর্শন করার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের হাসপাতালে চিকিৎসকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করাই সিভিল সার্জনদের দায়িত্ব। এ ক্ষেত্রে শুধু ফোন করে খোঁজ নিলে হবে না। সশরীরে পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দিতে হবে।’ তিনি চিকিৎসক ও নার্সদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘কাজ করলে পুরস্কার পাবেন, ফাঁকি দিলে বিদায় করে দেওয়া হবে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রায় সময় অভিযোগ পাওয়া যায়, চিকিৎসক বা নার্স ছুটি না নিয়ে অথবা অফিসে এসে স্বাক্ষর করেই কর্মস্থল ত্যাগ করেন, এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এসব ক্ষেত্রে জেলা সিভিল সার্জনদের তদারকি জোরদার করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী কর্মসূচিতে সফলতা অর্জনকারীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. দীন মো. নুরুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মাঝে জাতীয় অধ্যাপক ডা. এম আর খান, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বিমান কুমার সাহা, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. নূর হোসেন তালুকদার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি এন পারানিথারান, ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি এডুয়ার্ড বিগবিদার বক্তৃতা করেন।