পুলিশের নির্যাতনে আহত আ. লীগ নেতার মৃত্যু
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2018/10/04/photo-1538667494.jpg)
চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার ঝালকাঠির সদর উপজেলার বাসন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. খলিলুর রহমান মন্টুর (৪৮) মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কারা শাখায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত মন্টু বাসন্ডা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। পুলিশের নির্যাতনের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন। তবে পুলিশ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
নিহত মন্টু বাসন্ডা ইউনিয়নের লেশ প্রতাপ গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে আজ বৃহস্পতিবার ঝালকাঠি সদর উপজেলার বাসন্ডা ইউনিয়নের লেশ প্রতাপ গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয় ইউপি সদস্য খলিলুর রহমান মন্টুর মরদেহ। ছবি : এনটিভি
মন্টুর স্বজনরা জানিয়েছেন, লেশ প্রতাপ গ্রামের এক ব্যবসায়ীর করা চাঁদাবাজির মামলায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর ঝালকাঠি থানা পুলিশ মন্টুকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের সময় মন্টু রিকশা থেকে লাফ দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পড়ে গিয়ে তাঁর পা ভেঙে যায়। এ সময় ঝালকাঠি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন মন্টুকে লাঠি দিয়ে মারধর করেন। এতে তাঁর অণ্ডকোষে আঘাত লাগে। পুলিশ ওই দিনই তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। কিন্তু অসুস্থ হওয়ায় কারাগার থেকে তাঁকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেও তাঁকে সুষ্ঠু চিকিৎসা দেওয়া হয়নি, মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার জন্য চিকিৎসায় অবহেলা করা হয়েছে। মন্টু যদি সুস্থ হয়ে আসে তাহলে পুলিশের অপরাধ ফাঁস হয়ে যেতে পারে এজন্য তাঁর চিকিৎসা বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে। মন্টুর সঙ্গে তাঁদের দেখা করতে দেওয়া হয়নি। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গ্রেপ্তারের ২০ দিন পর আজ সকালে তাঁর মৃত্যু হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। অথচ মামলার বাদীপক্ষ গতকাল রাতেই জেনে যায় যে মন্টু মারা গেছে।
মন্টুর স্বজনরা এসআই দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে তদন্ত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
ঝালকাঠির সদর উপজেলার বাসন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. খলিলুর রহমান মন্টুর মৃত্যুতে স্বজনদের আহাজারি। ছবি : এনটিভি
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঝালকাঠি কারাগারের জেলার মো. তারিকুল ইসলাম জানান, হাজতি খলিলুর রহমান মন্টু কারাগারে অসুস্থ অবস্থায়ই এসেছিলেন। তাঁকে চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কারা শাখায় রাখা হয়েছিল। সেখানে বৃহস্পতিবার ভোরে তিনি মারা যান।
নির্যাতনের ব্যাপারে জানতে চাইলে ঝালকাঠি থানার এসআই দেলোয়ার হোসেন জানান, পা ভাঙার কারণে ইউপি সদস্য মন্টু মারা যাননি। তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন বলে মেডিকেলে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা জানিয়েছেন।
যোগাযোগ করা হলে বাসন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেন মল্লিক বলেন, আমাদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্টুকে নির্যাতন করে মারা হয়েছে। তাঁকে সুচিকিৎসা দেওয়া হয়নি। এই ঘটনায় কোনো ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। আমরা এই হত্যার বিচার চাই।