নিহত দুজনসহ আড়াই শতাধিক গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বহরমপুর গ্রামে বিজিবি ও গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনায় বিজিবি দুটি মামলা করেছে। এর মধ্যে একটি মামলায় বিজিবির গুলিতে নিহত দুজনসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরো আড়াই শতাধিক গ্রামবাসীকে।
বিজিবির ঠাকুরগাঁও ৫০ ব্যাটালিয়নের বেতনা সীমান্ত ফাঁড়ির কোম্পানি কমান্ডার নায়েব সুবেদার জহুরুল ইসলাম বাদী হয়ে শুক্রবার হরিপুর থানায় মামলা দুটি করেন।
হরিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিরুজ্জামান জানান, তিনজনকে আসামি করে একটি চোরাচালান মামলা করা হয়েছে। এতে আসামিরা চোরাচালানের মাধ্যমে ভারত থেকে গরু আনেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
তদন্তের স্বার্থে তিনজনের নাম প্রকাশ করা যাবে না বলে জানান ওসি আমিরুজ্জামান।
অন্যদিকে, বিজিবির ওপর হামলার অভিযোগে নিহত দুজনসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরো ২৫০ জনের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মামলাটি করেছে বিজিবি।
ঠাকুরগাঁও ৫০ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তুহিন মো. মাসুদ বলেন, মঙ্গলবার বহরমপুর গ্রামে বিজিবির ওপর হামলার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে।
ওসি আমিরুজ্জামান বলেন, সরকারি কাজে বাধা, বিজিবি সদস্যদের ওপর চড়াও হওয়া, অস্ত্র দিয়ে প্রাণনাশের চেষ্টা, সরকারি অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা, অস্ত্রের ক্ষতিসাধন করা ইত্যাদি অভিযোগে বিজিবির গুলিতে নিহত শিক্ষক নবাব আলী ও কৃষক সাদেকুল ইসলামসহ আরো ২৫০ জন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
ওসি জানান, মামলা দুটি গ্রহণ করা হয়েছে। ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপারের নির্দেশ পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
চোরাই গরু ঢুকেছে সন্দেহে বিজিবির সদস্যরা গত মঙ্গলবার হরিপুর উপজেলার বকুয়া ইউনিয়নের বহরমপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে কয়েকটি গরু জব্দ করে ট্রাকে তুললে গ্রামবাসী বাধা দেয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় বিজিবির সদস্যরা গুলি চালালে তিনজন নিহত হন। আহত হন বিজিবি সদস্যসহ অন্তত ২০ জন।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন রুইয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে নবাব আলী ও জহিরুলের ছেলে সাদেক মিয়া এবং বহরমপুর গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে জয়নাল নিহত হয়।
বিজিবির দাবি, জব্দ করা গরু বিওপিতে নেওয়ার সময় চোরাকারবারিরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় তাদের ওপর। আত্মরক্ষার্থে বিজিবি সদস্যরা তখন গুলি চালাতে বাধ্য হয়।