রাজীবের কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের রায় ২০ জুন

সড়ক দুর্ঘটনায় তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীবের মৃত্যুর ঘটনায় এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষ হয়েছে। আগামী ২০ জুন এ বিষয়ে রায়ের দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ উভয়পক্ষের শুনানি শেষে রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আবেদনকারী আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস। বিআরটিসির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ রাফিউল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাতার হোসেন সাজু।
এর আগে গত ১৯ মে ক্ষতিপূরণসহ কয়েকটি বিষয়ে রুলের শুনানি শেষে ২৩ মে রায়ের জন্য দিন ধার্য করেছিলেন হাইকোর্ট। তবে এ বিষয়ে রায় ঘোষণা না করে আদালত পুনরায় শুনানি করেন। কোনো ব্যক্তি দুর্ঘটনায় আহত বা নিহত হলে সংশ্লিষ্ট যানের ইন্স্যুরেন্সকারী কোম্পানি কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে, সে বিষয়ে আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে আদালত রায়ের জন্য পুনরায় দিন ধার্য করেন।
এর আগে ২০১৮ সালের ৩ এপ্রিল রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সার্ক ফোয়ারার কাছে বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের দুই বাসের রেষারেষিতে হাত হারান ছাত্র রাজীব। দুই বাসের চাপায় তাঁর ডান হাত কনুইয়ের ওপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দুর্ঘটনার পরপরই তাকে পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরদিন ৪ এপ্রিল রাজীবের চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল।
তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজীবের অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। ১৩ দিন চিকিৎসার পর ১৬ এপ্রিল মধ্যরাতে সেখানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন রাজীব।
এরপর তাঁর মৃত্যুর সংবাদ আদালতকে অবহিত করেন রিটকারী আইনজীবী। পরে আদালত রিটের শুনানি নিয়ে তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীবের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর পরিবারকে কেন এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে জারি করেন। যার ধারাবাহিকতায় ওই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে আদালত এ মামলার রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করেন।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বাঁশবাড়ি গ্রামের রাজীব তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় মা এবং অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাবাকে হারান। ঢাকার মতিঝিলে খালার বাসায় থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন স্নাতকে। কখনো টিউশনি করে, কখনো বা পার্টটাইম কাজ করে নিজে পড়াশোনা করেছেন এবং দুই ভাইকেও বানিয়েছেন কোরআনের হাফেজ।