‘হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করতে না পারলে পদত্যাগ করুন’
মুক্তমনা ও প্রগতিশীল প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করতে না পারলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে পদত্যাগ করতে বলেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ঢাবি শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়। ধর্মান্ধ জঙ্গিগোষ্ঠীর নির্মম হামলার প্রতিবাদে এবং দোষীদের গ্রেপ্তারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘খুনিদের গ্রেপ্তার করতে আপনি ব্যর্থ হয়েছেন। কাউকে আইনের আওতায় আনতে পারেননি। যদি গ্রেপ্তার করতে না পারেন তাহলে চলে যান। আর তা না হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আপনার পদত্যাগের দাবি জানাবে।’
ফরিদ উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ‘যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হচ্ছে তখনই এ ধরনের হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটছে। আমরা নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছি না। প্রতিবাদ করে যাচ্ছি। হত্যাকারীরা যাকেই টার্গেট করছে তাকেই দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিচ্ছে। আর আওয়ামী লীগের নেতারা এসব নিয়ে হটকারী বক্তব্য দিচ্ছেন, যা শুনে লজ্জায় আমাদের মাথা হেঁট হয়ে যায়।’
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এম এম মাকসুদ কামালের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, টেলিভিশন অ্যান্ড ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক শফিউল আলম ভূইয়া, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আজিজুর রহমান, ক্রিমিনোলজি বিভাগের অধ্যাপক জিয়া রহমান এবং নীল দলের আহ্বায়ক নাজমা শাহীন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের শিক্ষকরা মানববন্ধনে যোগ দেন।
এ সময় অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘দীপনের বাবাকে উদ্দেশ করে মাহবুব-উল-আলম হানিফ যে বক্তব্য দিয়েছেন তা মানুষের হৃদয়কে বিদীর্ণ করে দিয়েছে। পরে অবশ্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এগুলো কিসের বার্তা? এ বক্তব্যগুলো হত্যাকারীদের আরো প্রশ্রয় দেয়।’
নিজের বক্তব্যে অধ্যাপক শফিউল আলম ভূইয়া বলেন, ‘একজন বাবা তখন ছেলে হত্যার বিচার চান না, যখন দেশের বিচারব্যবস্থার প্রতি তাঁর কোনো আস্থা থাকে না। তিনি না চাইতে পারেন, কিন্তু আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’
সঞ্চালকের বক্তব্যে অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, ‘মুক্তমনা কোনো লেখক যখন খুন হন, তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন আমরা জানি কারা এ কাজ করেছে। মৃদু ভাষায় বলেন, আমরা অপরাধীদের ধরে ফেলব। কিন্তু আজ পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেননি তাঁরা। আপনি না পারলে আপনার পথ আপনি ধরেন।’