আ. লীগ নেতাকে ধরে নিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার!
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ পৌরসভার স্বতন্ত্র মেয়র পদপ্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক আবুল বাশার চোকদার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন।
তাঁর পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা আবুল বাশারকে আজ রোববার সকালে বাসা থেকে ধরে নিয়ে জোর করে মনোনয়ন প্রত্যাহার করিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ভেদরগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান হাওলাদার। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক আবুল বাশার চোকদার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি অংশ তাঁর পক্ষে অবস্থান নেয়।
আবুল বাশার চোকদারের পরিবারের সদস্যরা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন, আজ সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ১০-১২ সদস্যের একটি দল আবুল বাশারকে তুলে নিয়ে যায়। তাঁকে ভেদরগঞ্জ পৌর এলাকার গৈড্ডা গ্রামের বাড়ি থেকে ডামুড্ডা নেওয়া হয়। সেখান থেকে সকাল ১০টার দিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক তাঁকে (আবুল বাশার চোকদার) নিয়ে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আসেন। বেলা ১২টার দিকে নাহিম রাজ্জাক, গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক সুব্রত সাহা কয়েকজন নেতা-কর্মীকে নিয়ে জেলা প্রশাসকের কক্ষ থেকে বের হন।
এ সময় আবুল বাশার চোকদার কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছি। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।’ এ কথা বলে তিনি কক্ষ থেকে বের হয়ে সমর্থকদের নিয়ে ভেদরগঞ্জ চলে যান।
আবুল বাশারের স্ত্রী সুরাইয়া সুলতানা বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ডিবি পুলিশ আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে যায়। তাঁকে কেন কোথায় নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে ডামুড্যায় নেওয়া হচ্ছে বলে গাড়িতে তুলে নিয়ে চলে যায়।’
আবুল বাশারের ভাই জাকির হোসেন বলেন, ‘সংসদ সদস্য পুলিশ দিয়ে আমার ভাইকে তুলে আনেন। তাঁর নিজের গাড়িতে করে ডিসি অফিসে এনে জোর করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করিয়েছেন।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে বলেন, ‘আবুল বাশার দলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। তাঁকে কীভাবে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আনা হয়েছে তা আমার জানা নেই।’
জেলা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক সুব্রত সাহা বলেন, ‘ডিবি সদস্যরা কাউকে তুলে আনেনি। অভিযোগটি ভিত্তিহীন। সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আসায় তাঁকে নিরাপত্তা দিতে জেলা প্রশাসকের কক্ষের সামনে ডিবি সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছিল।’
এ বিষয়ে সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘আপনার আমাদের নিজেদের মানুষ। এখানে কোনো বক্তব্য, কোনো কিছু না। আপনারা ধৈর্য্য ধরেন, আমি আপনাদের বলবো।’
ভেদরগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল আহমেদ বলেন, ‘আবদুল গনি নামের এক ব্যক্তি আবুল বাশারের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের একটি চিঠি জমা দিয়েছেন। চিঠিটি আবুল বাশারের কি না, তা জানার জন্য ফোনে তাঁর সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।’