৩৬ ঘণ্টা পর ভোমরা বন্দরে ভারতীয় পণ্য আমদানি শুরু
কার পাস সিস্টেমের প্রতিবাদে টানা ৩৬ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর অবশেষে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে চার প্রকারের ভারতীয় পচনশীল আমদানি পণ্য বাংলাদেশে আসতে শুরু করেছে।
আজ বুধবার বিকেল থেকে চার ধরনের দ্রুত পচনশীল পণ্য এলেও অন্যসব পণ্যের কী হবে তা নিয়ে রাতেই কলকাতায় বৈঠক বসার কথা রয়েছে। সমঝোতা হলে বৃহস্পতিবার থেকে আবারও আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে ভোমরার বিপরীতে ভারতের ঘোজাডাঙ্গা বন্দরে কয়েকশ ভারতীয় পণ্যবাহী গাড়ি ঠায় পড়ে রয়েছে। কার পাস সিস্টেম প্রত্যাহার অথবা শিথিল না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশমুখী এসব ভারতীয় গাড়ি এভাবেই পড়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন দেশটির ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলেন, আজ রাতে কলকাতায় তাঁদের সাথে বৈঠক করবেন কাস্টমসের জেষ্ঠ কর্মকর্তারা। সেখানে আলোচনার মাধ্যমে সব সিদ্ধান্ত হবে। তবে তাঁরা এখনো অনড় রয়েছেন। কার সিস্টেম চালু করতে আরো কিছুদিন সময় দিতে হবে। প্রয়োজনে তত দিন পর্যন্ত বাংলাদেশে ভারতীয় পণ্য রপ্তানি বন্ধ রাখা হবে।
গত বছরের ২৬ ও ২৭ আগস্ট ভারতের দিল্লিতে অনুষ্ঠিত দুই দেশের বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারত সিদ্ধান্ত নেয় যে আমদানি রপ্তানি পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করতে হলে কার পাস সিস্টেম করতে হবে। ১২ জানুয়ারি থেকে তা ভারতে চালু করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়। তবে এই সিস্টেম চালু করতে বাংলাদেশ কাস্টমস কিছুটা সময় দেওয়ার পক্ষপাতি। ফলে ভোমরা কাস্টমস বিষয়টিকে নমনীয় দৃষ্টিতে দেখছে বলে জানিয়েছেন সহকারী কমিশনার শরিফ আল আমিন।
বর্তমানে ভোমরা-ঘোজাডাঙ্গা বন্দরে পণ্যবাহী গাড়ি ও চালকের জন্য গেট পাস সিস্টেম চালু রয়েছে। কার পাস সিস্টেম চালু করতে হলে প্রতিটি গাড়ির বিস্তারিত বিবরণ ও চালকসহ অন্য কর্মচারীদের ছবি, রেজিস্ট্রেশনসহ ২৫ প্রকারের তথ্য থাকতে হবে।
সহকারী কাস্টমস কমিশনার শরিফ আল আমিন বলেন, ভারতীয়দের সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়েছে ভোমরা স্থলবন্দরে। এজন্য ভারতীয়দের কারণেই ভোমরায় আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। তিনি জানান, ভারতীয়রা শেষ পর্যন্ত দ্রুত পচনশীল ভারতীয় মাছ, ফল, পেঁয়াজ ও পান এই চার প্রকার পণ্য ছাড় দিয়েছে। কার পাস ছাড়াই আগের মতো গেট পাস ব্যবহার করে বুধবার বিকেলে থেকে এই চার প্রকার পণ্যবাহী গাড়ি ভোমরা বন্দরে ঢুকতে শুরু করে।
ভারতীয় ব্যবসায়ীরা জানান, গেট পাস সিস্টেমের পরিবর্তে কার পাস সিস্টেম চালু করতে অনেক তথ্য প্রয়োজন হবে। সীমান্ত অতিক্রমের সময় এই তথ্য যাচাই-বাছাই করতে বাড়তি সময়ও নষ্ট হবে।
এতে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে ক্ষতি হবে এমন যুক্তি দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা তা শিথিল করার দাবি জানান। এতে কর্তৃপক্ষ সম্মত না হওয়ায় তারা মঙ্গলবার থেকে ভারতীয় পণ্যবহনকারী গাড়ি ভোমরা বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ বন্ধ করে দেন। এতে নেতৃত্ব দেন ঘোজাডাঙ্গা সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সম্পাদক যথাক্রমে কান্তি দত্ত ও পরিমল কুমার রায়।
ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী নওশাদ দিলওয়ার রাজু বলেন, ‘আমরা আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করিনি। ভারতীয়দের সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়েছে আমাদের ওপর। ঘোজাডাঙ্গায় গাড়ি বন্ধ হলে ভোমরায় গাড়ি আসে না।’ এ বিষয়ে তাঁরা ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বুধবার দুপুরে বৈঠক করে সমঝোতার চেষ্টা চালান বলে জানান তিনি।