নির্বাচনে মারামারির দায় ইসির না : শাহনেওয়াজ
নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বলেছেন, নির্বাচনে কেউ মারামারি করলে তার দায় নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নেওয়ার কোনো কারণ দেখি না। আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছি, কোনো সংহিসতা হলে যেন শক্তভাবে ভূমিকা গ্রহণ করে। যিনি সহিংসতা করবেন, তিনি যেন ছাড় না পান, যেন গ্রেপ্তার হন, যেন চরম ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কার্পণ্য না করে।’
আজ রোববার দুপুরে ইসি সচিবালয়ের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে শাহনেওয়াজ এসব কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের প্রত্যেক পর্যায়কেই আমরা সমানভাবে নিয়েছি। দ্বিতীয় পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, কর্মকর্তা সবই একই রকম থাকছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যারা আছে, তারা আরো শক্ত হবে। প্রথম পর্যায়ে শক্ত পদক্ষেপ নিয়েছি। দ্বিতীয় পর্যায়েও কেউ সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালালে শক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রথম পর্যায়ের নির্বাচনে ২৪ জন নিহত হওয়ার দায় কমিশন এড়াতে পারে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে শাহনেওয়াজ বলেন, কার ওপর দায় পড়ে এটা খোঁজ নিলেই পাবেন। পাশাপাশি দুই বাড়ির কেউ মারামারি করলে তার দায় নির্বাচন কমিশনের নেওয়ার কোনো কারণ আমি দেখি না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি নির্দেশনা রয়েছে, কোনো সংহিসতা হলে যেন শক্তভাবে ভূমিকা গ্রহণ করে। যিনি সহিংসতা করবেন তিনি যেন ছাড় না পান, যেন গ্রেপ্তার হন। তারা যেন চরম ব্যবস্থা নিতে কার্পণ্য না করে।
‘এটা অদ্ভুত একটা কথা। কমিশন কোথাও দাঁড়িয়ে থেকে নির্বাচন করে না। স্থানীয় নির্বাচন নিজেদের মধ্যেই হয়। তাদের (প্রার্থী) সম্মানের প্রশ্ন থাকে, দলাদলির প্রশ্ন থাকে, গ্রুপিংয়ের প্রশ্ন থাকে। এমন নয় যে, এবারই নতুন করে মারা গেল। পার্শ্ববর্তী দেশের পঞ্চায়েত নির্বাচনে এক কেন্দ্রেই প্রচুর মারা গেছে এমন ঘটনাও আছে। আমাদের পূর্ববর্তী নির্বাচনেও এর চেয়ে বেশি লোক মারা গেছে।’
শাহনেওয়াজ বলেন, এখন দলীয় প্রতীকের নির্বাচনে সবাই আচরণবিধি মেনে চলবে এটাই স্বাভাবিক ছিল। কিছু কিছু ব্যক্তির অতি উৎসাহের কারণে কিছু সন্ত্রাসী কার্যক্রম হচ্ছে। আমরা ব্যবস্থাও নিচ্ছে এবং ভবিষ্যতে আরো নেব। কেউ নিজস্ব এলাকায় মারামারি করলে, দেশের স্বাভাবিক অবস্থায় যখন মারামারি হয়, এর অর্থ এই নয় যে, নির্বাচন এলেই খুন হয়। এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া যে কিছু লোক বাড়াবাড়ি করবে, কিছু লোক ক্ষতিগ্রস্ত হবে, পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছি যে, নির্বাচনের কোনো বিষয়ে কেউ যেন বাড়াবাড়ি না করতে পারে। করলেই মামলাসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া জন্য বলেছি। এজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ গাফিলতি করলে তার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, প্রথম ধাপের ইউপি নির্বাচনে যেখানে যেখানে সহিংসতা হয়েছে, বাস্তবমুখী সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। একটা এলাকায় বেশি অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটেছে। আর অন্যগুলোতে তেমন ঘটেনি। এখন রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন দরকার। উত্তেজিত হয়ে অনেকেই সন্ত্রাসী কার্যক্রম করছে। আশা করি, তারা পরবর্তী পর্যায়ে সতর্ক হয়ে যাবে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে শাহনেওয়াজ বলেন, ‘আইনগুলো আমরা তৈরি করেনি। সংসদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ার আইন হয়েছে। আমরা তা বাস্তবায়ন করছি। এ জন্য তাড়াহুড়োও করেছি। যেহেতু সংসদে এভাবেই করার আইন পাস হয়েছে, সেহেতু দলীয়ভাবেই স্থানীয় নির্বাচন করতে হচ্ছে। তবে সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচনের জন্য যতটুতু শক্ত হওয়া দরকার ততটুকুও শক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ কেউ গালিফতি করলে বা ভোট জালিয়াতির ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চরম ব্যবস্থা নিতে আমরা পিছপা হব না।’