মারধরের পর হাসপাতাল থেকেও তাড়ানো হলো বৃদ্ধকে
ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হলো ষাটোর্ধ্ব মুসা গাজীকে। আহত অবস্থায় বৃদ্ধ হাসপাতালে যান চিকিৎসা নিতে। কিন্তু সেখানেও তাঁকে চিকিৎসা নিতে দেওয়া হলো না। ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজন হাসপাতাল থেকে জোর করে তাড়িয়ে দিয়েছে। এখন অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতেই বন্দি দিন কাটছে মুসা গাজীর।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের সাতানি গ্রামের বাসিন্দা মুসা গাজী। তাঁর স্ত্রী মুকুল বেগম টিয়াখালী ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ মশিউর রহমান শিমুর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ এনেছেন। এখন ভয়ে থানা-পুলিশ করতে সাহস পাচ্ছে না মুসা গাজীর পরিবার।
তবে ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মশিউর রহমান শিমু এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
মুসা গাজী অভিযোগ করে বলেন, সাতানি গ্রামে একটি ভিটাঢ তিনি পরিবার নিয়ে ১৭ বছর ধরে বসবাস করছেন। সম্প্রতি তিনি ভিটায় মাটি ফেলে উঁচু করতে যান। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান তাতে বাধা দেন। কিন্তু তিনি ভিটা উঁচু করেন।
‘চেয়ারম্যান বৃহস্পতিবার দুপুরে চারজন চৌকিদার পাঠিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে যান। এরপর আমাকে লাঠিপেটা করা হয়। পরে আমাকে রাতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে স্যালাইন ও ইনজেকশন দেওয়া হয়। আজ সকালে চেয়ারম্যানের আট-নয়জন লোক গিয়ে আমাকে হাসপাতালে থেকে তাড়িয়ে দেয়।’ বলেন মুসা গাজী।
মুসা গাজীর অভিযোগ, ভিটা থেকে উচ্ছেদ করার জন্যই আমাকে মারধর করা হয়েছে। এর পেছনে ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা ইব্রাহিম হাওলাদারও আছেন। ফের হামলা ও মারধরের আশঙ্কায় আছেন বলে জানান তিনি।
মুসা গাজীর দুই হাত ও পিঠে লাঠির আঘাতের জখম রয়েছে।
শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে মুসা গাজীর খোঁজ করলে সেবিকারা জানান, তিনি ভর্তি হয়েছিলেন। খাতায় নাম আছে। কিন্তু কোনো খোঁজ তারা দিতে পারেননি।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবদুল মান্নানকে মোবাইলে ফোন করলে তিনি তা রিসিভ করেননি।
টিয়াখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ মশিউর রহমান জানান, মুসা গাজী অন্যের জমি দখল করে ঘর তুলছিলেন। বাধা দেওয়ার পরও শোনেননি। এ নিয়ে মামলা হয়েছে। চৌকিদার দিয়ে ডেকে এনে ঘর তুলতে নিষেধ করা হয়েছে। মারধরের কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। মারধরের ঘটনা ষড়যন্ত্র।
কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জি এম শাহনেওয়াজ জানান, এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ দেয়নি।