স্ত্রীর কথায় পাওয়া গেল প্রবাসীর কঙ্কাল
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/06/14/photo-1465905455.jpg)
খুন হওয়ার সাড়ে সাত মাস পর ডোবার তিনফুট পানির নিচে মিলেছে প্রবাসী ময়নাল হোসেনের কঙ্কাল। আজ মঙ্গলবার কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আন্দিকুট ইউনিয়নের জাড্ডা গ্রামের ওই ডোবা থেকে ময়নালের কঙ্কাল উদ্ধার করে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
এ ঘটনায় ময়নালের স্ত্রী তাছলিমা বেগমসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিহত ময়নাল হোসেন সৌদি আরবে কাজ করতেন। দেশে আসার দুদিন পর গত ১ নভেম্বর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
গত ৮ মার্চ তাছলিমাকে আটক করে ডিবির সদস্যরা। ১০ মার্চ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন যে ময়নালকে হত্যা করে ডোবাতে ফেলে দেওয়া হয়।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মুরাদনগর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজগর আলীর উপস্থিতিতে ময়নালের কঙ্কাল উদ্ধার করে ডিবি। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলী আশরাফ, জেলা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মঞ্জুরুল আলম, বাঙ্গরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) সহিদুল ইসলাম ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তারা।
নিখোঁজ হওয়ার এক মাস পর গত ৮ ডিসেম্বর ময়নাল হোসেনের মা আমেনা খাতুন তাছলিমাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। অবশ্য এর আগে নিখোঁজ হওয়ার সাতদিন পর গত ৭ নভেম্বর ময়নালের স্ত্রী তাছলিমা ‘নিখোঁজ ময়নালে’র সন্ধান চেয়ে মুরাদনগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডিতে উল্লেখ করেছিলেন ‘ময়নাল হোসেন ঢাকার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরেননি।’
ময়নালের মা আমেনা খাতুনের দায়ের করা মামলা ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মুরাদনগর উপজেলার আকাবপুর নোয়াহাটি গ্রামের ময়নাল হোসেনের সঙ্গে প্রায় ১১ বছর আগে একই উপজেলার জাড্ডা গ্রামের মেয়ে তাছলিমা বেগমের বিয়ে হয়। তাঁদের দুইটি সন্তান আছে। প্রবাসী স্বামীর অনুপস্থিতিতে তাছলিমা বেগম একই গ্রামের শরীফুল ইসলাম নামের এক যুবকের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। গত বছরের ৩০ অক্টোবর ময়নাল হোসেন দেশে ফেরেন। এরপরই বিদেশে থেকে পাঠানো অর্থের হিসাব এবং স্ত্রীর পরকীয়ার বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়।
পুলিশ জানায়, এ কারণেই ময়নালের স্ত্রী তাছলিমা পাঁচ লাখ টাকার বিনিময়ে ছয়জন সন্ত্রাসীর সঙ্গে চুক্তি করে। পরিকল্পনা মোতাবেক গত বছরের ১ নভেম্বর রাতে দুর্বৃত্তরা ময়নালকে খুন করে লাশ জাড্ডা হাতিমারা গ্রামের একটি ডোবায় গুম করে রাখে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঁইয়া জানান, গত ৮ মার্চ ময়নালের স্ত্রী এবং পরের দিন তাঁর প্রেমিক শরীফুল ইসলামকে আটকের পরই বেরিয়ে আসে ওই হত্যাকাণ্ডের রহস্য। এ ঘটনার জন্য দায়ী চারজনকে আটক করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও জেলা ডিবির এসআই সহিদুল ইসলাম জানান, তাছলিমাসহ আটক অন্যদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ময়নালকে পুঁতে রাখার স্থান শনাক্ত করা হয়। আদালতের নির্দেশে ডোবার তিন ফুট পানির নিচে থেকে আজ লাশটি উত্তোলন করা হয়।