সিটি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিল বিএনপি
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রত্যাখ্যান ও বর্জন করেছে বিএনপি। আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। এ সময় ঢাকা উত্তরের বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও দক্ষিণের বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস তাঁর সঙ্গে ছিলেন।urgentPhoto
সংবাদ সম্মেলনে মওদুদ আহমদ বলেন, ‘এই নির্বাচনকে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। নির্বাচন থেকে আমাদের সমর্থিত সব প্রার্থীর প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘এ দেশে কোনো গণতন্ত্র নাই। আবারো প্রমাণিত হলো, মানুষের ভোটের অধিকার নেই। আমাদের প্রত্যাশা ছিল, নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হবে। মানুষ তাদের মতামত প্রকাশের সুযোগ পাবে। তাই আমরা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। ভেবেছিলাম, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলনকে আরো জোরদার করতে পারব। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, আমরা যা আশঙ্কা করেছিলাম, তা-ই হয়েছে।
সুষ্ঠু নির্বাচন তো দূরের কথা, নির্বাচন বলতে যা বোঝায় তা-ও অর্থহীন করে দিয়েছে সরকার ও নির্বাচন কমিশন।’
ব্যারিস্টার মওদুদ অভিযোগ করেন, ‘অনেক স্থানে আমাদের এজেন্টদের কেন্দ্রে যেতে দেওয়া হয়নি। ভোট শুরুর আধা ঘণ্টার ভেতরেই অনেক স্থান থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে, এমনকি অনেক স্থান থেকে এজেন্টদের গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে পুলিশ। পুলিশকে এখন আর নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে নিয়োজিত করা হয়নি। নির্বাচন কমিশন, পুলিশ, র্যাব সবাই মিলে আজ শুধু সরকারের ইচ্ছা পূরণ করেছে।’
দুই-তিনটি জায়গা ছাড়া দক্ষিণের ৫৮টি ওয়ার্ডের প্রায় সব কেন্দ্রেই সবাইকে বের করে দিয়ে সকাল ৯টার মধ্যে ভোট দেওয়া হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, ‘২৭ ও ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডসহ যেসব কেন্দ্রে কোনো মিডিয়া ছিল না, সেসব কেন্দ্রে নিরবচ্ছিন্নভাবে ভোট দিয়ে, ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্সগুলো ভরে দেওয়া হচ্ছে।’
উত্তরা হাই স্কুল, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সব কেন্দ্র, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সব কেন্দ্র, বঙ্গবন্ধু হাই স্কুল, ২, ৩ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সব এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে বলেও সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য। এভাবে অসংখ্য কেন্দ্রের নাম বলেন তিনি, যেখান থেকে ২০-দলীয় জোটের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।
এমনকি বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর শারীরিকভাবে অত্যাচার করা হয়েছে বলে জানান মওদুদ আহমদ। এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দীন আহমদ ভোট দেওয়ার পর তাঁকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে বলেও জানান ব্যারিস্টার মওদুদ। তিনি বলেন, ‘এমাজউদ্দীন আহমদকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে, কেন তিনি ভোট দিতে এসেছেন। এর পরে তাঁকে লাঞ্ছিত করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।’
ঢাকার কোনো কেন্দ্রে বিএনপির কোনো এজেন্ট নেই, তাদের বের করে দেওয়া হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন মওদুদ আহমদ।