দুই দশক নেতৃত্ব শূন্য বাবুগঞ্জ ছাত্রলীগ, প্রশ্নবিদ্ধ পদপ্রত্যাশীরা
২০ বছর ধরে ঝুলে আছে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি। যদিও এবার সেই জট খুলতে যাচ্ছে। এই উপজেলায় আসবে নতুন কমিটি—এমনটাই শোনা যাচ্ছে। নতুন কমিটিতে পদ পেতে তাই শুরু হয়েছে পদপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ। যদিও শোনা যাচ্ছে, ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের অধিকাংশই পেরিয়েছেন বয়সসীমী। আবার অনেকেরই নেই ছাত্রত্ব।
বাবুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সর্বশেষ কমিটি হয় ২০০৩ সালে। আক্তারুজ্জামান মিলনকে সভাপতি আর মনিরুজ্জামান রুম্মানকে সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত হয় ওই কমিটি। এরপর মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও নানা কারণের জটে ঝুলে যায় কমিটি গঠনের উদ্যোগ। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের ক্ষমতাকালীন সময়েও আলোর মুখ দেখেনি তা। অথচ, এই উপজেলাতেই তার বাড়ি।
এদিকে, সর্বশেষ কমিটির সভাপতি আক্তারুজ্জামান মিলন এখন একই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অন্যদিকে, সাধারণ সম্পাদক রুম্মান ব্যস্ত ব্যবসা-বাণিজ্যে। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে খুব একটা দেখা যায় না তাকে, দাবি স্থানীয়দের। আর অন্যান্য পদে যারা ছিলেন, তারাও পেরিয়েছেন ছাত্রলীগ নির্ধারিত বয়সসীমা। সেহিসেবে দলীয় অভিভাবকশূন্য বাবুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ।
পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে অনেকের নাম শোনা যাচ্ছে। তবে, স্থানীয় সূত্র বলছে, দৌড়ে এগিয়ে আছেন—কাজী ইয়াসির আরাফাত সোহেল, অ্যাডভোকেট ওবায়দুল হক জুয়েল, প্রসেনজিৎ দাস অপু, জহিরুল ইসলাম মুরাদ, ফায়জুল হক। এর মধ্যে কাজী ইয়াসির আরাফাত সোহেল ছাত্রলীগ করতে যে বয়সসীমা নির্ধারিত, তা পেরিয়েছেন অনেক আগেই। জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে এসএসসি পাস করা এই পদপ্রত্যাশী বিবাহিত।
জানতে চাইলে সোহেল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি জানি না, কবে কমিটি হবে। তবে, আমি পদপ্রত্যাশী। আমার অভিভাবকেরাই সিদ্ধান্ত নেবেন, আমি কমিটিতে থাকব কি না।’ তার বয়স চল্লিষোর্ধ্ব ও বিবাহিত প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা আমি জানি না। আর আমি আপনাকে এ বিষয়ে কোনো তথ্যও দেব না।’ ‘আপনি বিয়ে করেছেন কি না’ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিয়ের বিষয়টি ‘আমার অভিভাবক আর জেলা ছাত্রলীগ জানে, তাদের জিজ্ঞেস করুন।’
আরকে পদপ্রত্যাশী প্রসেনজিৎ দাস অপুর কাছে জানতে চাইলে তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে আমার বয়স সবচেয়ে কম। যদিও ৩৫ বছর।’ তবে, দীর্ঘদিন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় পদ প্রত্যাশী তিনি।
পদপ্রত্যাশী অ্যাডভোকেট ওবায়দুল হক জুয়েল বিষয়ে তথ্য বলছে, তিনি ২০০৩ সালে এসএসসি পাস করেছেন। পেশায় তিন ঠিকাদার ও অ্যাডভোকেট। অপর এক তথ্য বলছে, তিনি বিবাহিত।
অন্যদিকে, জহিরুল ইসলাম মুরাদের বয়স ৩৭ বলে জানা গেছে, ফায়জুল হকও পেরিয়েছেন ৩৫। আরেকজন সোহেল রানা, যার এখন আর ছাত্রত্ব, করেন ডিস ব্যবসা।
পদপ্রত্যাশীদের বিষয়ে এক প্রশ্নে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুর রাজ্জাক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা সিভি নিয়েছি। আশা করছি, আগস্ট মাস শেষ হলে সেপ্টেম্বর মাসে কমিটি দিতে পারব।’
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পদপ্রত্যাশীদের বয়স ও বৈবাহিক বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সংগঠনের জন্য অনেক সময় এদিক-সেদিক করতে হয়। তবে, আমরা বসে সিদ্ধান্ত নেব—আসলে কী করব।’