পুকুরে ডুবে সরকারি শিশু পরিবারের ২ শিশুর মৃত্যু
শরীয়তপুর সরকারি শিশু পরিবারের সোহেল বয়াতী ও সাদিকুল ইসলাম নামে দুই শিশু পুকুরের গোসল করতে গিয়ে ডুবে মারা গেছে। আজ বুধবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে শহরের ধানুকা এলাকার সরকারি শিশু পরিবারের পুকুরে এই ঘটনা ঘটে।
সাদেকুল গোসাইরহাট উপজেলার আলোওয়ালপুর ইউনিয়নের মাঝেরচর গ্রামের মৃত মাহমুদুল হাসানের সন্তান আর সোহেল বয়াতি ডামুড্যা উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের গংগেস কাঠি গ্রামের মৃত আলী আহমেদ বয়াতির সন্তান।
নিহত শিশুদের স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শিশু সোহেল বয়াতীর মা-বাবা কেউ বেঁচে নেই এবং সাদিকুল ইসলামের বাবাও মারা গেছেন। তারা দুজনেই শহরের সরকারি শিশু পরিবারে থাকত। আজ দুপুরে অন্য শিশুরা শ্রেণিকক্ষে চলে গেলে সোহেল ও সাদিকুল সবার অগোচরে পুকুরে গোসল করতে নামে। তারা সাঁতার না জানায় ডুবে যায়। পরে সেখানকার সহকারী তত্ত্বাবধায়ক শিশু দুটির খোঁজ না পেয়ে চারদিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পুকুর ঘাটে তাদের জামাকাপড় দেখে সবাই মিলে পুকুর নামে। দুজনকে উদ্ধার করে দ্রুত জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
সাদিকুল ইসলামের মামা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমাদের দুলাভাই মারা যাওয়ার পর আমার ভাগ্নেকে গত মাসে শিশু পরিবারে দেওয়া হয়। আজ দুপুরের দিকে সেখান থেকে মোবাইলে ফোন করে আমাকে হাসপাতালে আসতে বলে। আমি হাসপাতালে আসার পরে জানতে পারি আমার ভাগ্নেসহ আরেক শিশু পানিতে ডুবে মারা গেছে। কর্তৃপক্ষ যদি শিশুদের ঠিকভাবে দেখাশোনা করত তাহলে আমার ভাগ্নে মারা যেত না।’
সরকারি শিশু পরিবারের সহকারী তত্ত্বাবধায়ক আ. মান্নান হাওলাদার বলেন, সব শিশু ক্লাস রুমে চলে গেছে। আমি সাদেকুল ও সোহেলকে দেখেছি বারান্দায় খেলতে। এরপর আমি অফিসে গিয়ে কাজ করি। কাজ শেষে ফিরে এসে তাদের দেখতে না পেয়ে বাবুচির কাছে জিজ্ঞেস করি। সে দেখেনি বলে জানায়। পরে স্যারকে জানিয়ে খোঁজাখুঁজি করতে থাকি। কোথাও খুঁজে না পেয়ে পুকুরপাড়ে গিয়ে তাদের গামছা, সাবান ও জামা কাপড় দেখতে পাই। পরে সবাই পুকুরে নেমে দুজনকে পাই। উদ্ধার করে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
বাচ্চা দুইজনকে উদ্ধারকারী আ. খালেক বলেন, ‘আমরা এই শিশু পরিবারের ভিতরে নির্মাণশ্রমিকের কাজ করি। হঠাৎ করে দেখি স্যারেরা দুজন বাচ্চা খুঁজতাছে। পরে আমাকে বলে একটু খুঁজতে। আমি পুকুরে পানিতে নেমে দুজনকে একসঙ্গেই পাই।’
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা মানসুরা ইসলাম বলেন, পানিতে পড়া দুটি শিশুকে এখানে নিয়ে আসা হয়েছিল। তবে তারা দুজনের মৃত অবস্থায় ছিল।
এ বিষয়ে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।