সেই সেলিমের বিষয়ে যে তথ্য দিলেন চিকিৎসক
মিল্টন সমাদ্দারের ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার হোম’ থেকে উদ্ধার হয়েছেন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা মো. সেলিম মিয়া (৪৫)। তার পেটে একটি কাটা দাগ দেখে পরিবারের লোকদের সন্দেহ হয় মিল্টন সমাদ্দার সেলিমের কিডনি বিক্রি করে দিয়েছে। এ নিয়ে হৈচৈ পড়ে যায় এলাকাতে। খবর প্রকাশিত হয় মিডিয়াতেও। সন্দেহের বশে সেলিমের পরিবার শরণাপন্ন হয় চিকিৎসকের।
গতকাল শনিবার (১১ মে) রাতে জেলার একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সেলিমের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কিডনি রোগ বিভাগের চিকিৎসক ডা. সৈয়দ হাসানুল ইসলাম আকাশ। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তিনি জানান, সেলিমের দুই কিডনিই অক্ষত আছে।
ডা. সৈয়দ হাসানুল ইসলাম বলেন, ‘বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আমরা জানতে পারি অস্ত্রোপচার করে সেলিমের কিডনি অপসারণের করা হয়নি। তার দুটি কিডনিই অক্ষত রয়েছে। তবে যে জায়গায় কিডনি থাকে সে জায়গায় ক্ষত থাকায় সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছিল।’
এই চিকিৎসকের ধারণা, মানসিক ভারসাম্যহীন সেলিমকে কোনো কিছু দিয়ে বেঁধে বা বেল্ট পরিয়ে আটকে রাখার জন্যই স্থানটিতে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকায় সেলিমকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সেলিমের চাচাতো ভাই আবদুর রশিদ বলেন, ‘কিডনি খুলে নেওয়া হয়েছে সন্দেহে ডাক্তারের কাছে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানা যায়, সেলিমের দুটি কিডনিই অক্ষত রয়েছে। তবে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক।’
গত ৭ মে ঢাকার সাভারে অবস্থিত মিল্টন সমাদ্দারের চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার হোম থেকে সেলিমকে উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন। মানসিক ভারসাম্যহীন সেলিম মিয়া ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের বৃপাচাশী গ্রামের দরিদ্র হাসিম উদ্দিনের ছেলে।
প্রায় ছয় মাস আগে সেলিম নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের পর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়ে পরিবারের লোকজন। এরই মধ্যে মিল্টন সমাদ্দারের চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারের বিষয়টি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সেলিমের খোঁজে সেখানে যায় তার পরিবার। ৭ মে মিল্টন সমাদ্দারের চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারে সেলিমের খোঁজ পায় তারা। পরে থানা পুলিশের সহায়তায় গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সেলিমকে সেখান থেকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন।