চলে গেল রিমাল, নিঃস্ব করে গেল জেলে-কৃষকদের!
ঘূর্ণিঝড় রিামলের ক্ষত দীর্ঘ মেয়াদের দাদনের যাঁতাকলে ফেলতে পারে উপকূলে জেলে ও কৃষকদের। ঋণ নিয়ে জাল ও নৌকা কেনা জেলে আর চাষাবাদের জন্য ঋণ নেওয়া কৃষকের সব কেড়ে নিয়েছে রিমাল। বরগুনা, পাথরঘাটা, আমতলী ও তলাতলী এলাকার এসব মানুষ সব হারিয়ে নিঃস্ব প্রায়। তাই ঘুরে দাঁড়াতে বেসরকারি সহযোগিতার পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে সুদমুক্ত ঋণ চান তারা।
জলেই জীবন, জলেই জীবিকা যুদ্ধ। জাল, জল তাই জেলে রহিমের কাছে পুরো পৃথিবী। বরগুনার পাথরঘাটার পদ্মা পাড়ের ছেলে রহিমের মাছ ধরা বন্ধ গেল এক সপ্তাহ ধরে। ঘূর্ণিঝড় রিমালে উড়ে গেছে তার ঘরবাড়ি, ভেঙেছে নৌকা। এখন নৌকা আর জাল কেনার জন্য সুদে নেওয়া ঋণ পরিশোদের চিন্তায় দিশেহারা রহিম।
জেলে রহিম বলেন, ‘বাড়িতে গাছপালা, ঘরবাড়ি সব ভেঙে গেছে। টাকা পয়সা তেমন নেই। ঋণ করা আছে। এখন আবার ঋণ নিয়ে ঘরবাড়ি করতে হবে। সরকার আমাদের কাছ থেকে সুদ যত কম নেয়, আমাদের জন্য তত ভালো।’
ঘূর্ণিঝড় রিমাল বরগুনার উপকূল অঞ্চলের পরতে পরতে রেখে গেছে তার ভয়াল চিহ্ন। পাথরঘাটা, আমনা, বামনা, তালতলী, আমতলীর বাড়িতে বাড়িতে ধংসযজ্ঞ। বিদ্যুতের ভেঙে যাওয়া খুঁটি এখনও মেরামত হয়নি। গেল পাঁচ দিন ধরে বিদ্যুৎহীন এখানকার বাসিন্দারা।
স্থানীয়রা জানান, ঘরের ভেতরে পানি প্রায় তিন থেকে চার ফুট উপরে ওঠে যায়। এ সময় অনেক কাঁচা ঘর ভেঙে যায়। ধান, গাছপালা সব নষ্ট হয়ে গেছে। জমির পানি কিছুটা কমে গেলে পানিতে তলিয়ে যাওয়া পাকা ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন কৃষক আউয়ুব আলী। প্রতি শতাংশ জমিতে ধান আবাদে যে খরচ হয়েছে, দাদনের টাকা মিটিয়ে লাভ তো দূরের কথা ক্ষতির খতিয়ান কত দীর্ঘ হবে তা নিয়েই কপালে দুশ্চিতার ভাঁজ আইয়ুব আলীর।
কৃষক আইয়ুব আলী বলেন, ‘প্রতি শতকে আমার খরচ হয়েছে ৬০০ টাকার বেশি। এখন যে অবস্থা তাতে সমান সমান থাকা যাবে কিনা, সেটাই চিন্তা করতেছি।’