র্যাব পরিচয়ে ৫২ লাখ টাকা ছিনতাই মামলায় গ্রেপ্তার ৪
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) পরিচয়ে ৫২ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় করা মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৬ মে) দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাউ মারমা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ সময় তাদের কাছ থেকে অপরাধ কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি সিলভার রঙের প্রাইভেটকার, নগদ চার লাখ ৪৯ হাজার টাকা, তিনটি কালো রঙের র্যাবের কটি, একটি সেনাবাহিনীর পোশাকের রঙের কাঁধের ব্যাগ, একটি লেজার লাইট, একটি কালো রঙের খেলনা রিভলবার, এক জোড়া হ্যান্ডকাফ ও দুটি কালো রঙের মাথার ক্যাপ উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন শামীম আহম্মেদ সবুজ (৩৪), ইকবাল হোসেন ওরফে ইসলাম (৪৫), হাফিজুর রহমান সুমন ও আব্দুর রহমান মেহেদী (৩০)।
গতকাল বুধবার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ‘গ’ সার্কেল হাবিবুর রহমান ও আড়াইহাজার থানার পরিদর্শকের (তদন্ত) নেতৃত্বে সঙ্গীয় ফোর্সের সহায়তায় তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, গ্রেপ্তার করা ইকবাল হোসেন ওরফে ইসলামের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভুয়া কর্মকর্তা পরিচয়ে দস্যুতা ও ছিনতাই সংক্রান্ত আটটি, আব্দুর রহমান মেহেদীর বিরুদ্ধে চারটি, শামীম আহমেদ সবুজের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় পাঁচটি মামলা রয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাউ মারমা বলেন, গত ২৩ মে রাত ৮টার দিকে আব্দুল বাতেন নামে এক ব্যবসায়ী তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে ৫২ লাখ টাকা ও বিভিন্ন ধরনের ব্যাংকের একাধিক চেক নিয়ে তাঁর মেয়ের জামাই রানা আহমেদসহ নিজ প্রাইভেটকারে করে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। পৌনে ৯টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুপতারা পাকা রাস্তার পাল্লা কবরস্থান সংলগ্ন রাস্তায় পৌঁছালে র্যাবের ব্যবহৃত পোশাক ও কটি পরিহিত অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি তাঁদের প্রাইভেটকারটি সংকেত দিয়ে থামান। এ সময় র্যাবের ব্যবহৃত পোশাক ও কটি ছাড়াও ওই ব্যক্তিদের হাতে অস্ত্র, লাঠি, হ্যান্ডকাফ ও সিগন্যাল লাইট ছিল। একপর্যায়ে তারা ভয়-ভীতি দেখিয়ে ও প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে ব্যবসায়ী বাতেনের মেয়ের জামাই ও গাড়িচালক সুমনকে প্রাইভেটকার হতে নিচে নামিয়ে মুখে স্কচটেপ পেচিয়ে দেয়। এরপর বাতেনের কাছে থাকা ৫২ লাখ টাকা, বিভিন্ন ব্যাংকের একাধিক চেক ও চারটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে তারা ওই ব্যবসায়ীর প্রাইভেটকারসহ লুণ্ঠিত মালামাল নিয়ে পালানোর সময় মেয়ের জামাই রানা আহমেদ ‘৯৯৯’ এ কল দেন। ‘৯৯৯’ এর কল পেয়ে আড়াইহাজার থানা পুলিশ তাৎক্ষণিক ওই প্রাইভেটকারটির পিছু নিলে দুবৃর্ত্তরা প্রাইভেটকার রেখে লুণ্ঠিত মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আব্দুল বাতেন বাদী হয়ে আড়াইহাজার থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলার সূত্র ধরেই আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া এ মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।