হিন্দু পরিচয়ে কালীমন্দিরে থাকতেন গ্রেপ্তার দুজন : ডিবি
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের দুর্গম পাহাড়ি এলাকার পাতাল কালীমন্দির থেকে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যায় জড়িত দুই পলাতক আসামি ফয়সাল ও মোস্তাফিজকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মগহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। দুই আসামি হিন্দু পরিচয়ে কালিমন্দিরে থাকতেন বলে ডিবির দাবি।
আজ বুধবার (২৬ জুন) বিকেলে রাজধানীর পূর্বাচলে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এ দাবি করেন। এর আগে পাহাড়ি এলাকায় হেলিকপ্টার দিয়ে সাঁড়াশি অভিযান চালায় ডিবি।
মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, এমপি আনার হত্যার মূল ঘাতক ছিল শিমুল ভূঁইয়া। আর আজকে গ্রেপ্তার দুজন শিমুলের মূল সহযোগী। এ দুজন গ্রেপ্তারের সঙ্গে সঙ্গে তারা আমাদের কাছে সবকিছু স্বীকার করেছেন। তারপরও আমরা তাদের আরেকটু জিজ্ঞাসাবাদ করে আপনাদের আরও বিস্তারিত জানাব।
হারুন অর রশীদ বলেন, সীতাকুণ্ড পাহাড়ের নিচেই একটি পাতাল কালীমন্দির রয়েছে। সেখানে ফয়সাল ও মোস্তাফিজ গিয়ে অন্য নাম ধারণ করেন। তাদের একজন নাম ধারণ করেন পলাশ রায়, আরেকজন শিমুল রায়। দুই নাম ধারণ করে তারা সেখানে হিন্দু পরিচয়ে কালীমন্দিরে থাকতেন। সেখানে বলেছেন, আমরা কালী মাকে বেশি ভালোবাসি। আমরা কালীমন্দির ছাড়া থাকতে পারি না। ছদ্মবেশ ধারণ করে তারা এখানে ২৩ দিনের মতো ছিলেন।
হারুন অর রশীদ বলেন, ইন্ডিয়া থেকে কাজ সম্পন্ন (আনারকে হত্যা) করে তারা ১৯ মে দেশে ফিরে আসেন। ১৯ তারিখ রাতেই তারা শাহীনের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের দুজনকে খরচের জন্য মাত্র ৩০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। সীতাকুণ্ড উপজেলার পাতাল কালীমন্দির এলাকা তারা আগে থেকেই চিনতেন। সেজন্য সেখানে গিয়ে ভিন্ন পরিচয়ে আত্মগোপনে থাকা শুরু করেন।
হারুন বলেন, এ ঘটনার তদন্তে আমাদের অনেক টিম কাজ করে। কখনো তথ্য পাওয়া যেত, তারা সমুদ্রে রয়েছে। কখনো পাহাড়ে আছে বলে তথ্য পাওয়া যেত। বাঁচার জন্য (গ্রেপ্তার এড়ানো) তারা বিভিন্ন জায়গায় আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছেন। আগেই বলেছিলাম, পাহাড়ে থাকুক আর পাতালে থাকুক, তাদের আমরা ধরে আনব। এমপি আনার হত্যায় যে সাতজন ব্যক্তি কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছিলেন, তার মধ্যে শিমুল ভূঁইয়ার পর এরা দ্বিতীয় ও তৃতীয় ব্যক্তি। হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া সাতজনই ভারত-নেপাল ও বাংলাদেশে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
হারুন অর রশীদ আরও বলেন, এখন আমাদের কাজ হচ্ছে, বাকি যারা মাস্টারমাইন্ড হিসেবে কাজ করেছেন; অর্থনৈতিকভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন, বিভিন্ন বিষয়ে হেল্প করেছেন, আমরা মনে করি এখন তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। ইতোমধ্যে আমার ১৬৪ ধারার জবানবন্দির ভিত্তিতে মিন্টু ও বাবুকে গ্রেপ্তার করেছি। এ নিয়ে মোট নয়জন গ্রেপ্তার হয়েছে। সামনে আমাদের মূল কাজ হলো মাস্টারমাইন্ডকে গ্রেপ্তার করা।