চট্টগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি
চট্টগ্রামের মিরসরাই, ফটিকছড়ি, রাউজান ও হাটহাজারীতে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল, হালদা নদীর বেড়িবাঁধে ভাঙন ও ফেনী নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে ওঠায় উপজেলাগুলোর বেশিরভাগ ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।
এসব উপজেলার বেশিরভাগ ইউনিয়ন প্লাবিত হওয়ায় সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। পানিবন্দি রয়েছে লাখ লাখ মানুষ। গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) দিনগত রাতে হালদা নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর পানির তীব্রতা আরও বাড়ে। এখন পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ।
আজ শুক্রবার (২৩ জুলাই) বিকেলেও এসব উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে পানি ওঠায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা বিভিন্ন যানবাহন আটকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ঢাকামুখী লেন ব্যবহার করতে না পারায় উদ্ধার কাজেরও বিঘ্ন ঘটছে।
জানা গেছে, মিরসরাই উপজেলার করেরহাট, হিঙ্গুলী, ধুম ও ইছাখালী ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গতকাল অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ে গেলেও বাড়িঘর ফেলে যাননি অসংখ্য মানুষ। পরে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা পানিবন্দি হয়ে পড়ে। গতকাল দুপুর ১২টা থেকে এসব এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক না থাকায় উদ্ধারকাজে বিঘ্ন ঘটছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফটিকছড়ি উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নের সবকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ধুরং ও হালদা নদীতে পানির চাপ বাড়ায় কয়েকটি স্থানে ভেঙে গেছে বেড়িবাঁধ। ঘরবাড়িতে হাঁটু থেকে কোমর পরিমাণ পানি উঠেছে।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ বি এম মশিউজ্জামান জানান, উপজেলার আওতাধীন প্রত্যেক ইউনিয়নে অতি বৃষ্টির কারণে বন্যা দেখা দিয়েছে। তবে হালদা নদীর নাজিরহাট নতুন ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় বেড়ি বাঁধ ভেঙে গিয়ে ১নং ফরহাদাবাদ ইউনিয়ন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউনিয়নের কয়েকটি ওয়ার্ডের বসতঘরে পানি ঢুকে পাড়েছে। যেসব পরিবারের বসতঘরে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে তাদের সরিয়ে এনে আশ্রয় কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। এই ইউনিয়নে অবস্থিত শিশু পরিবারের সদস্য ও নিরাপদ হেফাজতীদের কাটিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের আশ্রয় কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রিতদের মধ্যে খিচুড়ি বিতরণ করা হয়েছে। তারা যত দিন আশ্রয়কেন্দ্রে থাকবে তত দিন তাদেরদের মধ্যে খিচুড়ি বিতরণ করা হবে। চার হাজার ৫০০ লোককে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক দুর্গত পরিবারের লোকজনকে উদ্ধার করছে। এ ছাড়া দক্ষিণ হাটহাজারী শ্যামা সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়েও ২০ থেকে ২৫টি পরিবারকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।