প্রধান নদ-নদীর পানি হ্রাস অব্যাহত আছে : ত্রাণ মন্ত্রণালয়
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীর পানি সমতল হ্রাস অব্যাহত আছে। বিগত ২৪ ঘণ্টায় পূর্বাঞ্চলীয় কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী জেলার ভারতীয় ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এবং ত্রিপুরা প্রদেশের অভ্যন্তরীণ অববাহিকাসমূহে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত পরিলক্ষিত হয়নি এবং উজানের নদ-নদীর পানি সমতল হ্রাস অব্যাহত আছে। গত ২৪ ঘণ্টায় উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত পরিলক্ষিত হয়নি। ফলে বর্তমানে ফেনী ও কুমিল্লা জেলার নিম্নাঞ্চলের বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত আছে।
আজ সোমবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান।
সচিব বলেন, দেশে চলমান বন্যা আক্রান্ত ১১ জেলায় মোট ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ৫৭ লাখ ১ হাজার ২০৪ জন। পানিবন্দি পরিবার ১২ লাখ ৩৮ হাজার ৪৮টি। ৭৪ উপজেলা বন্যা প্লাবিত এবং ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন/পৌরসভা ৫৫০টি।
এখন পর্যন্ত বন্যায় মোট ২৩ জন মারা গেছে জানিয়ে দুর্যোগ সচিব বলেন, এর মধ্যে কুমিল্লায় ৬ জন, ফেনীতে একজন, চট্টগ্রামে ৫ জন, খাগড়াছড়িতে একজন, নোয়াখালীতে ৫ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া একজন, লক্ষ্মীপুরে একজন এবং কক্সবাজারে তিনজন মারা গেছেন। মৌলভীবাজারে দুজন নিখোঁজ রয়েছেন বলেও জানান।
কামরুল হাসান আরও জানান, এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৮৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৫২৩ জন আশ্রয় নিয়েছেন। ১১ জেলায় ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সেবা দিতে মোট ৬৪৫টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে।
সচিব বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে কুমিল্লা জেলার সব উপজেলায় সড়ক পথে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। আজ সোমবার ২০ হাজার প্যাকেট খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে ৮ হাজার প্যাকেট হেলিকপ্টারের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। এছাড়া সেনাবাহিনীর চারটি মেডিকেল টিম প্রয়োজনীয় ওষুধসহ কুমিল্লা জেলার চার উপজেলায় নিয়োজিত রয়েছে।
ফেনীতে স্বাস্থ্যসেবা দিতে ফিল্ড হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব বলেন, সেনাবাহিনী ও জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসকরা সেবা দিচ্ছন। পাশাপাশি স্থানীয় ক্লিনিক, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বন্যার্তদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে সহায়তা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে কামরুল হাসান বলেন, যারা ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে সহায়তা (চেক/পে-অর্ডার/ব্যাংক ড্রাফ্টের মাধ্যমে) দিতে চান প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সরকারি ছুটি ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই সহায়তা গ্ৰহন করবেন।
যারা ত্রাণ তহবিলে সহায়তা (চক/ পে- অর্ডার/ ব্যাংক ড্রাফট এর মাধ্যমে) প্রদান করতে ইচ্ছুক তাদেরকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব অঞ্জন চন্দ্র পাল মোবাইল-০১৭১৮০৬৬৭২৫ ও সিনিয়র সহকারি সচিব শরিফুল ইসলাম মোবাইল-০১৮১৯২৮১২০৮ এর সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা যাচ্ছে।