গুম মানবতাবিরোধী অপরাধ, যা মৌলিক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন : তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, গুম একটি মানবতাবিরোধী অপরাধ, যা মৌলিক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে তিনি আজ বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) একথা বলেন। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বাংলাদেশে নজিরবিহীন গুমের ঘটনায় লাখ-লাখ দেশবাসীর মতো তিনিও গভীরভাবে উদ্বিগ্ন উল্লেখ করে বলেন, রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে এটি প্রয়োগ করা হয়। তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দুঃশাসনে গুমকে ব্যবহার করা হয়েছে জনসমাজে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য। নির্ভরযোগ্য মানবাধিকার সংস্থাগুলো একযোগে প্রকাশ করেছে যে, ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সাত শতাধিক মানুষকে বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো গুম করেছে। এটি অত্যন্ত পীড়াদায়ক, আজ পর্যন্ত একটি ঘটনারও ন্যায়বিচার পাওয়া যায়নি।
তারেক রহমান বলেন, এই নিখোঁজ মানুষগুলো ছিলেন তাদের পরিবারের প্রাণপ্রিয় সদস্য। তাদের স্বপ্ন, ভালোবাসা ও সুন্দর ভবিষ্যৎ ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। এই মানুষগুলো কোথায় আছে আমরা জানি না, তবে রেখে গেছে মর্মান্তিক ও বেদনাবিধুর বাংলাদেশ, যেখানে আমাদের অর্জিত মানবাধিকার ও মূল্যবোধ লুণ্ঠিত হয়েছে।
গুম আন্তর্জাতিক অপরাধ হিসেবে স্বীকৃত উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আইসিসির রোম সনদের ৭ (২) অনুচ্ছেদে গুমকে মনবতার বিরুদ্ধে একটি অপরাধ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। আর এই মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ন্যায়বিচারের প্রয়োজনীতার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা রাজনৈতিক দর্শন, জাতি, ভাষা, নৃগোষ্ঠী, সংস্কৃতি, বর্ণ ইত্যাদীসহ রাষ্ট্রীয় সীমানাকে অতিক্রম করে গুম হওয়া মানুষগুলোর স্মরণে এবং সেই সঙ্গে তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানোর জন্য দিবসটি পালন করি। তারেক রহমান এই মনুষ্যত্বহীন অপরাধে জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে, ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতার জন্য পুরো বিশ্বে ঐক্য ও সংহতির আহ্বান জানান।
তারেক রহমান বলেন, আমার দলের পক্ষ থেকে আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, বিএনপি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করলে, বাংলাদেশে আর কোনো ব্যক্তি যেন গুম না হয়, সেটি নিশ্চিত করার জন্য, আমরা জাতিসংঘের নেওয়া গুম প্রতিরোধ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কনভেশন (আইসিপিপিইডি) অনুস্বাক্ষর করব। সেইসঙ্গে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আইসিপিপিইডি অনুসারে প্রয়োজনীয় আইনপ্রণয়ন করব ইনশা আল্লাহ। মানবতার বিরুদ্ধে এই গুরতর অপরাধের ন্যায়বিচার হতেই হবে।