গুমের শিকার প্রিয়জনের জন্য থামছে না পরিবারের কান্না
গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণ আর পরিবারকে সমবেদনা জানাতে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস পালিত হচ্ছে আজ। বাংলাদেশ এবার জাতিসংঘের গুমবিরোধী সনদে সই করায় দিবসটি বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে। পরিসংখ্যান বলছে, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে ৭ শতাধিক মানুষ গুম হয়েছেন। নিখোঁজদের সন্ধান, শনাক্তকরণ ও কেন গুম করা হয়, তা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিশন গঠন করেছে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার।
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মধ্যদিনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আয়নাঘরের বন্দিশালা থেকে মুক্তি পান সালাউদ্দিন আহমেদ, ব্যারিস্টার আরমান, ব্রি. জে. আজমী, মাইকেল চাকমার মতো অনেকেই। বছরের পর বছর নিখোঁজ থাকার পর তাদের এই মুক্তিতে, গুম হওয়া ব্যক্তিদের ফিরে পাওয়ার আশায় বুক বাঁধছেন স্বজনরা। গুমের শিকার প্রিয়জনের এখনও কোনো হদিস না পাওয়ায় পরিবারের কান্না থামছে না।
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে তাদের স্বজনদের সমন্বয়ে গঠিত সংগঠন মায়ের ডাক এবং মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে সাত শতাধিক মানুষ গুম হয়েছেন। মায়ের ডাকের তথ্যমতে, অনেকে প্রাণে বাঁচলেও দেড় শতাধিক মানুষের খোঁজ মেলেনি এখনও।
এমন বাস্তবতায়, অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরই সিদ্ধান্ত নেয় গুম প্রতিরোধে জাতিসংঘের সনদে সই করবে বাংলাদেশ। এর আগে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক ৯টি সনদের আটটিতে সই করলেও গত ১৫ বছরে গুমবিরোধী সনদে সই করেনি শেখ হাসিনা সরকার। অবশেষে গুম প্রতিরোধ দিবসের একদিন আগে সনদে সই করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এর ফলে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গুমের জন্য সরকারের যেকোনো প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে পারবে জাতিসংঘ। গুম করার অপরাধে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধান, শনাক্তকরণ ও তারা কোন পরিস্থিতিতে গুম হয়েছিলেন, তা তদন্ত করতে পাঁচ সদস্যের কমিশন গঠন করেছে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার।