সরিয়ার মধ্যে ভূত রেখে অন্তর্বর্তী সরকার কিছুই অর্জন করতে পারবে না : সালাহউদ্দিন
গুমের পর ৬১ দিনে ‘আয়না ঘরে’ বন্দি ছিলেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। এরপর ভারতের শিলংয়ে উদ্ধার দেখিয়ে ৯ বছর ভারতে নির্বাসিত রাখা হয় তাকে। আজ শুক্রবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষে সংহতি সভায় আয়না ঘরে রেখে নির্মম অত্যাচারের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, সরিয়ার মধ্যে ভূত রেখে এই অন্তর্বর্তী সরকার কোনো কিছু অর্জন করতে পারবে না।
গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে এই সংহতি সভার আয়োজন করা হয়। সভায় সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি আজকে খোলাসা করে বলতে চাই, আয়না ঘরের প্রধান খলনায়ক ছিল বেনজীর (বেনজীর আহমেদ) ও জিয়াউল আহসান। একজন চাকুরিচ্যুত হয়েছে, গ্রেপ্তার হয়েছে। এখানে একজন বলে গেছেন, জিয়াউল আহসানকে কোনো ইন্টারোগেশন করা হচ্ছে না। আমি একমত। তখন কর্নেল ছিল, এখন মনে হয় তাকে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি দিয়ে রিটায়ার করে তারপর তাকে গ্রেপ্তার করে নাটক সাজিয়েছে…ডিবিতে নিয়ে গেছে ইন্টারোগেশনের জন্য।
বিএনপির এই নেতা বলেন, কয়েকদিন…আপনারা সংবাদপত্রের বন্ধুরা কেউ কি দেখেছেন জিয়াউল হাসান আজ পর্যন্ত কারও গুমে তার ভূমিকার কথা স্বীকার করেছেন? করেননি। কারণ, জিয়াউল আহসানের পেছনে যারা ফ্যাসিবাদকে রক্ষা করার জন্য, হাসিনাকে রক্ষা করার জন্য, ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার জন্য কাজ করেছিল, তারা এখনও রাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় আছে। আমি বলতে চাই—সরিয়ার মধ্যে ভূত রেখে এই অন্তর্বর্তী সরকার কোনো কিছু অর্জন করতে পারবে না।
সালাহউদ্দিন বলেন, জিয়াউল আহসানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এখন এমনভাবে তাকে ইন্টারোগেশন করা হোক, আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে তার নেতৃত্বে বাংলাদেশে যত গুম-খুন-অপহরণ হয়েছে, তা যেন সে বলতে বাধ্য হয়। অন্যথায় জেনে রাখবেন…চাপ দিচ্ছি না সরকারের ওপরে…ছাত্র-জনতা এখনও আন্দোলনে আছে।
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, বেনজীর এই গুম-খুনের জন্য একজন মহাখলনায়ক, হাসিনার দুঃশাসন টিকিয়ে রাখতে যার ভূমিকা ছিল অপরিসীম। সে এখন কোথায়? তাকে খুঁজে বের করতে হবে। সে যেখানেই আছে, পৃথিবীর যেখানে থাকুক, সেখান থেকে টেনে হিঁচড়ে এনে ন্যায় বিচার করতে হবে। ডিবি হারুন (হারুন অর রশিদ), মনিরুল ইসলাম কোথায়? চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন কোথায়? তাদের গ্রেপ্তার করে তদন্ত করতে হবে, বিচার করতে হবে—এটা শত শহীদের রক্তের অঙ্গীকার। তিনি বলেন, এই গুম-খুনের রাজত্ব যিনি কয়েম করেছেন, তিনি হলেন শেখ হাসিনা। নাম্বার ওয়ান থেকে শুরু করতে হবে। শেখ হাসিনা দিল্লিতে পালিয়ে আছেন। আমি দাবি করছি, দিল্লির সরকার তাকে ফেরত দেন। যদি ফেরত না আনা হয় তাহলে আন্তর্জাতিক আদালতে তার বিচার করা হবে। তিনি বলেন, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ (আজিজ আহমেদ) বাংলাদেশে বহু গুম-খুনের নায়ক। তাকে গ্রেপ্তার করতে হবে।