বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যা : দশ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণে রুল জারি
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ রাব্বীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তার পরিবারকে দশ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আজ মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) শাহীন আলম নামের এক আইনজীবীর করা রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মুহম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুলসহ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেদওয়ান আহমেদ রানজীব ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেদওয়ান আহমেদ রানজীব জানান, বুয়েটসহ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিরাপদ পরিবেশের নিশ্চয়তা প্রদানে নিষ্ক্রিয়তাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং আবরারের পরিবারকে কেন ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না এই মর্মে রুল জারি করেছেন।
আর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে একটি ইনকোয়ারি কমিশন গঠনের নির্দেশনা দিয়েছেন যে, আবরারের ঘটনার সময় এই টর্চার যে হয়েছে সেখানে কার কার ব্যর্থতা ছিল, ওই সময় নিরাপত্তা নিশ্চিতে যে ব্যর্থ হয়েছে সেগুলো দেখার জন্য কমিশন গঠনে নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান রেদওয়ান আহমেদ রানজীব।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শের-ই-বাংলা হলে ফাহাদ রাব্বীকে পিটিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তারা সবাই বুয়েটেরই শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরের দিন ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা বরকত উল্লাহ। মাত্র ৩৭ দিনে তদন্ত শেষ করে একই বছরের ১৩ নভেম্বর চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান।
২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনের যাবজ্জীবনের আদেশ দেন আদালত। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান ওই রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মেহেদী হাসান রাসেল (২৪), মো. অনিক সরকার ওরফে অপু (২২), মেহেদী হাসান রবিন ওরফে শান্ত (২৩), ইফতি মোশাররফ সকাল (২০), মো. মনিরুজ্জামান মনির (২১), মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (২৩), মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ (২০), মো. মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ (২১), খন্দকার তাবাকারুল ইসলাম অরফে তানভির (২১), হোসেন মোহাম্মদ তোহা (২১), মো. শামীম বিল্লাহ (২১), মো. সাদাত এ এস এম নাজমুস সাদাত (২১), মুনতাসির আল জেমী (২০), মো. মিজানুর রহমান মিজান (২২), এস এম মাহমুদ সেতু (২৪), সামসুল আরেফিন রাফাত (২১), মো. মোর্শেদ অরফে মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম (২০), এহতেশামুল রাব্বি অরফে তানিম (২০), মোহাম্মদ মোর্শেদ উজ্জামান মণ্ডল প্রকাশ জিসান (২২) ও মুজতবা রাফিদ (২১)। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- অমিত সাহা (২১), ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না (২১), মো. আকাশ হোসেন (২১), মুহতাসিম ফুয়াদ (২৩) ও মো. মোয়াজ অরফে মোয়াজ আবু হোরায়রা (২১)।
পরে ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি এ মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে এসে পৌঁছায়। ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলে তা অনুমোদনের জন্য মামলার যাবতীয় কার্যক্রম উচ্চ আদালতে পাঠাতে হয়। এছাড়া এ মামলার রায় অনুযায়ী আসামিরা উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবেন।