আবু সাঈদ হত্যায় পুলিশের ভূমিকা লজ্জার : আরএমপি কমিশনার
‘আবু সাঈদ হত্যায় পুলিশের ভূমিকাটি ছিল লজ্জার, এ ঘটনায় দেশে বীর আবু সাঈদ ঘরে ঘরে জন্ম নিয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরআমপি) নবাগত কমিশনার মজিদ আলী।
আজ মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় আরআমপির সম্মেলন কক্ষে রংপুরে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় নবাগত পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী এ মন্তব্য করেন।
মতবিনিময় সভায় পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘আবু সাঈদকে কারা গুলি করল, কীভাবে মৃত্যু হলো? এটি প্রমাণ করার জন্য খুব বেশি সাক্ষীর প্রয়োজন হবে না। তাকে হত্যা করে পুলিশ যে কাজটা করল, তা অত্যন্ত লজ্জার এবং অপেশাদার কাজ ছিল। একটা অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে রংপুর পুলিশ লাইন্স কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র মাহিমকে গ্রেপ্তার করে হত্যাকারী সাজানো হলো। এটিও বিশ্ববাসী দেখল।’
‘এ রকম কর্মকাণ্ড থেকে আমরা বিরত থাকব’ উল্লেখ করে পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘কোনো লোক দেখানো তদন্ত নয়। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত হত্যাকারীকে খুঁজে বের করা হবে।’
নবাগত পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, ‘আবু সাঈদ যেভাবে শহীদ হয়েছেন, সেটি দেখে বিশ্বের মানুষ শিহরিত হয়েছে। এরপর দেশে বীর আবু সাঈদ ঘরে ঘরে জন্ম নিয়েছে। আবু সাঈদের আত্মদান বাংলাদেশের ইতিহাসে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে—এটি আমার বিশ্বাস। আমি এখানে যোগদানের পরই আবু সাঈদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছি এবং পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে ক্ষমা চেয়েছি।’
স্বাধীনতার ঊষালগ্ন থেকে পুলিশের ভালো ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে নবাগত এ পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পুলিশ বাহিনী সবসময় ভালো কাজ করেছে—এটা যেমন সঠিক নয়, তেমনি সব খারাপ কাজ করেছে এটিও ঠিক নয়। রাষ্ট্রগঠনসহ দেশের মানুষের কল্যাণমূলক কাজ করেছে এই পুলিশ বাহিনী। করোনা মহামারিসহ নানাবিধ কাজ করে প্রশংশিত হয়েছে। তবে কিছু স্বার্থান্বেষী দলদাস ও অতি উৎসাহীর কারণে পুলিশ বাহিনীর আজকের এ পরিণতি। কিন্তু এটা মাথায় নিয়ে বসে থাকলে কিংবা সমাজ থেকে আলাদা থাকলে এই বাহিনীর অস্তিত্ব থাকবে না। সুতরাং আমাদের বসে থাকার সময় নেই, চুপ করে থাকার সময় নেই—আমাদের গৌরব ফিরিয়ে আনতেই হবে।’
‘আমি এই শহরকে চিনি, এই অঞ্চলে আমার বাড়ি। এখানেই বেড়ে উঠেছি। পুলিশের যে প্রকৃত কাজ, তা করতে চাই।’ উল্লেখ করে আরএমপি কমিশনার বলেন, ‘পুলিশের যা কাজ, তা করতে চাই। ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে আমাকে তুলে ধরার কিছু নেই। ‘ফেসবুক পুলিশিং, ধানকাটা পুলিশিং, মানবিক পুলিশিং, লোক দেখানো পুলিশিং, শো-অফ করা পুলিশিং আমি করব না, কথা দিচ্ছি। মানুষ যাতে স্বস্তিতে ঘুমাতে পারে। রাস্তায় চলাচল করতে পারে, যুবতী, নারী শপিং করতে পারে, রাস্তায় সন্ধ্যায় হাঁটতে পারে নির্বিঘ্নে—এসব নিশ্চিত করাই আমাদের কাজ।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আর্টমেপির উপকমিশনার (অ্যাডমিন) আবু বক্কর সিদ্দিক, ডিবির উপকমিশনার ইবনে মিনানসহ পুলিশ কর্মকর্তারা।