সীমান্তে বিএসএফের মূল টার্গেট বাংলাদেশি : রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সীমান্ত হত্যা বিষয়ে বলেছেন, সীমান্ত হত্যায় বিএসএফের মূল টার্গেটই থাকে বাংলাদেশি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সীমান্ত হত্যায় উদাসীন কেন? কেন আপনারা জোড়াল আওয়াজ তুলছেন না?
আজ রোববার (৬ অক্টোবর) দুপুরে মৌলভীবাজার সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত জুড়ী উপজেলার কালনীগড় গ্রামে স্বর্ণা দাসের বাড়ির পাশে খাগটেকা বাজার মাঠে এক সভায় এ কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে অনেক প্রতিবাদ করা হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত শান্তিপূর্ণ সীমান্ত ঘোষণার লক্ষ্য নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ ব্যতীত যারাই ক্ষমতায় এসেছিল সীমান্ত শান্তিপূর্ণ রাখার জন্য আহ্বায়ন জানানো হয়। কিন্তু ভারত এটি শুনেনি। তারা ফেলানীর মতো সীমান্তে স্বর্ণা দাসকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। সীমান্তের এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উদাসীন কেন? কেন আপনারা জোড়ালো আওয়াজ তুলছেন না? একটি নিষ্পাপ কিশোরী মেয়েকে হত্যার মতো দৃষ্টতা যে দেশ দেখাতে পারে সেই দেশকে কেন কড়া প্রতিবাদ জানানো হলো না? ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ সীমান্তে হিন্দু নাকি মুসলমান তা দেখে গুলি করে না, সীমান্তে তাদের মূল টার্গেটই হলো বাংলাদেশিরা।
রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, গত ১৬-১৭ বছরে সীমান্তে এত হত্যা হয়েছিল কিন্তু শেখ হাসিনা নিশ্চুপ ছিলেন। তাঁর সময়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একদিনও একটি প্রতিবাদ জানায়নি ভারতকে। স্বৈরাচার হাসিনার নির্দেশে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে বছরের পর বছর কারাগারে রাখা হয়েছে। তার পরও দেশনেত্রী স্বৈরাচারী সরকারের কাছে মাথা নত করেননি। আমরা সেই নেত্রীর দল করি। আমরা সেই নেতার দল করি যেই নেতা স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে একটি জাতিকে একটি দেশ এনে দিয়েছেন। ৭৫-এর পর বাকশালের কালো অন্ধকার গর্ত থেকে আবারও বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। গত ১৫ বছরের আন্দোলনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পাশাপাশি দেশ নায়ক তারেক রহমানের সুযোগ্য নেতৃত্বে গোটা জাতিকে গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে যেভাবে প্রস্তুত করেছেন তার ফসল জুলাই আন্দোলন। যা ৫ আগস্ট সফল হয়।
রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, “আপনারা জানেন, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ নামে দেশনায়ক তারেক রহমান নিজেই প্রধান পৃষ্ঠপোষক হয়ে একটি সামাজিক ও মানবিক সংগঠন গঠন করেন। যা মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। যারা গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে জীবন দিয়েছেন, হাত হারিয়েছেন, পা হারিয়েছেন, চোখ হারিয়েছেন, যারা যুবলীগ ছাত্রলীগের গুন্ডাদের আক্রমণে আজও হাসপাতালে কাতরাচ্ছে, বিশেষ করে বিগত ১৫ বছরে যারা গুম খুন হয়েছে তাদের পরিবারের সঙ্গে দলের যোগাযোগের জন্য এই সংগঠন গঠন করা হয়েছে।
কাতার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির উপদেষ্টা শরিফুল হক সাজুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ‘আমরা বিএনপি পরিবারে’র উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, আলমগীর কবীর, আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সহসভাপতি নাসির উদ্দিন আহমেদ মিঠু।
এ সময় ‘আমরা বিএনপি পরিবারে’র পক্ষ থেকে বিএসএফের গুলিতে নিহত স্বর্ণা দাসের পরিবারের হাতে আর্থিক অনুদান তুলে দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।