উচ্ছেদের নামে গরিবের বাড়ি-ঘরভাঙা হয়েছে : স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেছেন, বিগত বছরগুলোতে নদীর আশেপাশের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের নামে গরিবের বাড়ি-ঘর ভাঙা হয়েছে৷ অথচ এসব ঘর-বাড়ির পাশেই বিশাল ভবন এখনো বীরদর্পে দাঁড়িয়ে আছে৷ উচ্ছেদের নামে যেসব এলাকায় বাড়ি-ঘর ভাঙা হয়েছে, রাজধানীর অধিকাংশ গৃহপরিচারিকারা এসব এলাকায় থাকেন৷ এভাবে উচ্ছেদ করাও ঠিক না, তাদের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়ে৷
আজ বুধবার (৯ অক্টোবর) ঢাকার কারওয়ানবাজারে পানি ভবনে ব্লু নেটওয়ার্ক অ্যারাউন্ড ঢাকা সিটি শীর্ষক সেমিনারে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা উপস্থিত সুধীবৃন্দের প্রতি এসব কথা বলেন। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সভাপতিত্বে এতে অতিথি উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
হাসান আরিফ বলেন, আমরা বিশেষজ্ঞগণকে সমন্বয় করে কমিটি গঠন করেছি৷ আমাদের প্রথম কাজ হবে তাদের পরামর্শের ভিত্তিতে সমস্যা চিহ্নিত করা। তারপর সমাধানের পথ খুঁজে বের করা৷ আমরা জানি, রোড কনস্ট্রাকশন নির্মাণে সঠিক নিয়ম-নীতি অনুসরণ করা হয়নি। আমাদের সমন্বিতভাবে এখন অ্যাকশন প্লান শুরু করতে হবে৷ বিশেষজ্ঞমহল থেকে যে প্রস্তাবনা আসছে তা যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে৷
শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান জানান, ঢাকা শহরে খাল-বিল, নদী-নালা বন্ধ হতে হতে এমন অবস্থায় এসেছে যা আমরা কখনো প্রত্যাশা করিনি। অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ অভিযান শুরু করতে হবে৷ অবৈধ দখলদারদের থেকে যদি নদী-নালা উদ্ধার করতে না পারি, তাহলে জুলাই-আগস্ট মাসে অভ্যুত্থানের ফলাফল জনগণ দেখতে পাবে না৷ এজন্য মন্ত্রণালয় থেকে যা করা দরকার তা করবো৷
সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমরা যদি ঢাকার খাল ও নদী নিয়ে না ভাবি তাহলে ঢাকাকে বাঁচাতে পারবো না। ঢাকার নদী ও খালগুলোকে বাঁচাতে হলে সমন্বিত কর্মপরিকলনা গ্রহণ করতে হবে। ঢাকার প্রত্যেকটা খালের বাস্তব চিত্র খুঁজে বের করতে হবে। ঢাকার নদী ও খালগুলোকে রক্ষা করতে আমাদের তাৎক্ষণিক, মধ্যমেয়াদী ও তিন বছরের রোডম্যাপ এবং সমন্বিত অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করতে হবে। ঢাকার বর্তমান প্রজন্ম কোনো পরিষ্কার খাল দেখেনি।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান তাঁর বক্তব্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, রাজউক, সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে যুক্ত করে দ্রুত ঢাকার খাল ও নদী দখলমুক্ত করার কর্মসূচি গ্রহণ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া তিনি ঢাকার খালগুলো দূষণ ও দখলমুক্ত করার প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের ব্যয় সাশ্রয়ী হওয়ার তাগিদ দেন।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল হাসান, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মুহাম্মদ আমিরুল হক ভূঞাসহ আরও অনেকে।