সাভারে সাবেক এমপিসহ ৪৭৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা
সাভারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মো. জুয়েল (৩২) নামের এক পরিবহন শ্রমিককে গুলি করে হত্যা প্রচেষ্টার ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামসহ ৪৭৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গতকাল রোববার (২৭ অক্টোবর) রাতে আশুলিয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। মামলার বাদী ভূক্তভোগী জুয়েল। তিনি লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার বেলাবাড়ি গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে। বসবাস করেন আশুলিয়ার জামগড়ায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে পরস্পরের যোগসাজসে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, মারাত্মক অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করে গুরুতর জখমসহ হুকুম দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবে রক্তক্ষয়ী অধ্যায়ের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের মধ্য দিয়ে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। ওইদিন ছাত্র-জনতা বিজয় মিছিল নিয়ে থানার দিকে অগ্রসর হলে বাইপাইল মোড়ে বাম পায়ে গুলিবিদ্ধ হন জুয়েল। গুরুতর অবস্থায় তাকে প্রথমে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে স্থানান্তর করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
সাবেক সংসদ সদস্য ও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ছাড়াও মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন, আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন মাতব্বর, আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহবায়ক কবির হোসেন সরকার, যুগ্ম আহবায়ক মঈনুল ইসলাম ভূঁইয়া, ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ শামীম আহম্মেদ সুমন ভুইয়া, পাথালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ান, সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন খান, ঢাকা জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য এনামুল হক মুন্সী, ঢাকা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য দেওয়ান রাজু আহমেদ প্রমুখ।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক জানান, মামলার বাদী ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশুলিয়ার আমলি আদালতে নালিশী মামলা দায়ের করেন। ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া বেগম মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার নির্দেশ দিলে থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়।
আবু বকর সিদ্দিক বলেন, জুলাই-আগস্ট গণহত্যা ও হত্যা প্রচেষ্টার বেশ কিছু মামলা পুলিশের অপরাধ সংস্থা সিআইডি ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করছে। ইতোমধ্যে এসব মামলার বেশ কিছু আসামি গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ডে আছেন। অনেকে আবার রিমান্ড শেষে কারাগারে আছেন। আত্মগোপনে থাকা আসামিদের বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে এবং তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।