মুক্তিপণ পেতে ডাকাতির সময় শিশুটিকে অপহরণ করা হয় : র্যাব
মুক্তিপণের উদ্দেশ্যে রাজধানীর আজিমপুরে বাসা থেকে ডাকাতির সময় আট মাস বয়সী শিশু আরিসা জান্নাত জাইফাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল মুনীম ফেরদৌস।
আজ শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল মুনীম ফেরদৌস এ তথ্য জানান।
র্যাব জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) মধ্য রাতে মোহাম্মদপুর নবীনগর হাউজিং এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় মূল অপহরণকারী ফাতেমা আক্তার শাপলাকে (২৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মুনীম ফেরদৌস বলেন, শুক্রবার মধ্য রাতে শিশু জাইফাকে উদ্ধারের সময় মূল অপহরণকারী ফাতেমা আক্তার শাপলাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে, মুক্তিপণের উদ্দেশে শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছিল। আজিমপুরে বাসায় ডাকাতি ও শিশু অপহরণের ঘটনায় শাপলার সঙ্গে সুমন, রায়হান ও হাসান নামে আরও তিন সহযোগী ছিলেন। তাদের টার্গেট ছিল শিশু জাইফার বিনিময়ে তার মার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ আদায় করা। তবে ঘটনার পর গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হলে তারা আত্মগোপনে থাকেন।
র্যাব জানায়, শিশুটির মা ফারজানা আক্তার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্টেনোগ্রাফার হিসেবে কর্মরত। বাবা আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে ল্যাব সহকারী হিসেবে কর্মরত। প্রতারক শাপলা প্রায় দুই সপ্তাহ আগে শিশুটির মা ফারজানাকে টার্গেট করেন। তিনি বাসে অফিসে যাতায়াতকালে শাপলা নানা কৌশলে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন। একপর্যায়ে শাপলা অসহায়ত্বের কথা বলে শিশুর মায়ের সঙ্গে সাবলেটে একই বাড়িতে থাকার পরিকল্পনাও করেন। এক সপ্তাহ আগে ফারজানার বাসায় এসেছিলেন শাপলা। পরে বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাতে আজিমপুরে ফারজানার বাড়িতে একটি রুম সাবলেটে ভাড়ায় ওঠেন। ওইদিন রাতে কৌশলে ভুক্তভোগীকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়। পরদিন (শুক্রবার) সকালে শাপলার আরও তিন জন সহযোগী ওই বাড়িতে প্রবেশ করে। বাড়িতে থাকা নগদ ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, প্রায় সাত ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট করা হয়। এরপর শিশুটিকে অপহরণ করে নবীনগর হাউজিং এলাকায় নিয়ে যায়।
এক প্রশ্নের উত্তরে লে. কর্নেল মুনীম ফেরদৌস বলেন, শিশু অপহরণের ঘটনায় তার বাবা আবু জাফরকে নজরদারিতে রেখেছে র্যাব। শিশুর বাবা-মার মধ্যে সাংসারিক মনোমালিন্য ছিল। তাই তারা আলাদা থাকতেন। তবে শিশুর বাবার আজিমপুরে বাসায় নিয়মিত আসা-যাওয়া ছিল। দিনে শিশুর সঙ্গে থেকে রাতে তিনি অন্যত্র চলে যেতেন। এ ঘটনার সঙ্গে তার কোনও সম্পৃক্ততা আছে কিনা তা পুলিশ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
র্যাব জানায়, অপহরণকারী শাপলার গ্রামের বাড়ি বগুড়া। তিনি ২০১৪ সাল পর্যন্ত লালমাটিয়া মহিলা কলেজে পড়াশোনা করলেও তা শেষ করেননি। মা-বোনের সঙ্গে আদাবর নবীনগর হাউজিংয়ে থাকতেন।