সাবেক এমপি সোহেলকে ধরে পুলিশে দিল জনতা
রাগের মাথায় পিস্তল দিয়ে ফাঁকা গুলি করে ক্ষুব্ধ জনতার হাতে ধরা পড়েছেন নীলফামারী-৩ (জলঢাকা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) অবসরপ্রাপ্ত মেজর রানা মোহাম্মদ সোহেল (৫৮)।
গতকাল রোববার (১৭ নভেম্বর) হবিগঞ্জের চুনারুঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, রোববার বিকেলে মেজর (অব.) রানা মোহাম্মদ সোহেলকে বহনকারী গাড়িটি শ্রীমঙ্গল থেকে সাতছড়ি যাচ্ছিল। পথে চুনারুঘাট পৌরসভার পশ্চিম পাকুড়িয়া খোয়াই বেইলী ব্রিজে যানজটের কবলে পড়ে। এ সময় রানা মোহাম্মদ সোহেলের গাড়িটি পেছানোর চেষ্টা করলে পেছনে থাকা একটি মোটরসাইকেলে ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে রানা মোহাম্মদ সোহেল ক্ষিপ্ত হয়ে নিজের সঙ্গে থাকা পিস্তল উচিয়ে ফাঁকা গুলি ছুড়েন। গুলির আওয়াজে বেইলী ব্রিজে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। মুহূর্তের মধ্যে ব্রিজে যানজট ও আশপাশের এলাকার মানুষ জড়ো হয়। গুলি ও প্রতিপক্ষের সঙ্গে সংঘাতময় পরিস্থিতি এড়াতে স্থানীয় লোকজন রানা মোহাম্মদ সোহেলকে আটক করে থানায় খবর দেয়।
অপরদিকে, গাড়ির ধাক্কায় আহত হন মোটরসাইকেল আরোহী জি এম শাহিন। তাকে চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আহত জি এম শাহিন সাটিয়াজুরী ইউনিয়নের উষাইনগর এলাকার বাসিন্দা।
চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পিস্তলসহ রানা মোহাম্মদ সোহেলকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে মনিপুরীদের রাস অনুষ্ঠান উপভোগ করতে এক নারীসহ তিনি শ্রীমঙ্গলে যান। পরে শ্রীমঙ্গল থেকে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন।
হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) রেজাউল হক খান জানান, সেনাবাহিনী রানা মোহাম্মদ সোহেলকে পুলিশের কাছ থেকে তাদের হেফাজতে নিয়ে গেছে। অপরদিকে, তার অস্ত্রটি চুনারুঘাট থানা পুলিশের মাধ্যমে জব্দ করা হয়েছে।
খবর পেয়ে শাহজিবাজার সেনা ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন সামিউনের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে ক্যাপ্টেন সামিউন বলেন, ঘটনাটি ভুল বোঝাবুঝি। তিনি সেনাবিহনী থেকে অবসর নিয়েছেন, এটি সঠিক। তবে অস্ত্রটি লাইসেন্সকৃত কি-না যাচাই করা হচ্ছে।
রানা মোহাম্মদ সোহেল সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। এরপর তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।