র্যাব সংস্কার করা সম্ভব নয় : জুলিয়া ব্লেকনার

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) জ্যেষ্ঠ গবেষক জুলিয়া ব্লেকনার সাংবাদিকদের বলেছেন, যে দলই ক্ষমতায় এসেছে, র্যাবকে নির্যাতনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। র্যাবকে সংস্কার করা সম্ভব নয়।
কাঠামোগত সংস্কারের বিষয়ে জুলিয়া ব্লেকনার বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্বাধীন করতে হবে। তাঁদের রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে। তাঁদের পদোন্নতি থেকে শুরু করে নিয়োগ রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকতে হবে।
এদিকে আজ মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন এইচআরডব্লিউর প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় ২০০৪ সালে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) গঠন করা হয়েছিল। এরপর যেসব সরকার ক্ষমতায় এসেছে, তারা এই বাহিনীকে দায়মুক্তি দিয়ে কাজ করার অনুমতি দেয়।
র্যাবের এক কর্মকর্তা হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে বলেন, গুম, হত্যা বা ক্রসফায়ারের ঘটনার জন্য র্যাবের একটি আলাদা দল রয়েছে। বেশিরভাগ কাজই ওই দল করে।
র্যাবে নিজের কাজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে একজন কর্মকর্তা বলেন, ২০১৬ সালে তিনি র্যাবে যোগ দিয়ে হতবাক হয়েছিলেন। কারণ, একজন প্রশিক্ষক প্রকাশ্যে বলেছিলেন, তিনি ১৬৯টি ক্রসফায়ার পরিচালনা করেছেন।
রাজনৈতিক নেতারা যখনই ক্ষমতার বাইরে থাকেন, তখন র্যাবের বিলুপ্তির বিষয়ে একমত পোষণ করেন। গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর মার্কিন সরকার র্যাবের পাশাপাশি বাহিনীর সাতজন সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর তাদের প্রতিবেদনে র্যাবকে বিলুপ্তির সুপারিশ করেছে।
র্যাবপ্রধান এ কে এম শহীদুর রহমান ইউনিটের গোপন আটক কেন্দ্রের কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ইউনিটটি বিলুপ্তি করে দিতে চাইলে র্যাব তা মেনে নেবে।
এমন প্রেক্ষাপটে এইচআরডব্লিউ, জাতিসংঘ ও দাতারা সরকারকে সুপারিশ করে বলেছে, র্যাব বিলুপ্তি করা হবে শুধু এই শর্তে, র্যাবের সঙ্গে যুক্ত সব কর্মকর্তা যাতে অন্য ইউনিটে গিয়ে একই অপকর্মের চর্চা করতে না পারেন, সে জন্য তাঁদের মানবাধিকার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।