প্রতিবন্ধী ৪ সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন জব্বার-সুফিয়া দম্পতির

ঠাকুরগাঁও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বাসিন্দা জব্বার আলী। পেশায় একজন বাইসাইকেল মেকার। ২৬ বছর আগে সুফিয়া বেগমের সঙ্গে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। এই দম্পতির ঘরে একে একে জন্ম হয় চার সন্তানের। তাদের মধ্যে দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। তারা সবাই জন্মগত প্রতিবন্ধী। চার সন্তান নিয়ে জব্বার-সুফিয়া দম্পতির মানবেতর দিন কাটছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিয়ের পর অনেকটাই সুখী ছিলেন বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ৬নং ভানোর ইউনিয়নের বাসিন্দা জব্বার আলী ও সুফিয়া বেগম দম্পতি। তবে এ সুখ বেশি দিন থাকল না তাদের কপালে। বিয়ের কিছুদিন পরেই প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নেয় প্রথম সন্তান লতিফা আক্তার (২৪)। এরপর ধাপে ধাপে প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নেয় তাদের আরও তিন সন্তান আব্দুস সামাদ, জসিম উদ্দিন ও জেসমিন আক্তার। এ যেন সুখের সংসারে বড় অভাবের ভার।
স্থানীয় একটি বাজারে সাইকেল মেরামতের কাজ করেন জব্বার আলী। যা থেকে প্রতিদিন আয় হয় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। এই আয় দিয়েই সন্তানদের চিকিৎসা তো দূরের কথা খাবারও জোটে না ভালোভাবে। এর পরেও থেমে নেই এই দম্পতি। একদিকে বাজারে অন্যের সাইকেল মেরামত করে সংসারের হল ধরছেন বাবা জব্বার আলী। অপরদিকে বাড়িতে প্রতিবন্ধী চার সন্তানকে দেখাশুনা করছেন মা সুফিয়া বেগম ও দাদি জেরিনা খাতুন।
জব্বার আলী ও সুফিয়া দম্পতি বলেন, অভাবের সংসার হলেও সাইকেল মেরামতের টাকা দিয়ে সংসার চলানোর পাশাপাশি সন্তানদের চিকিৎসা করছেন তারা। তবে সঠিক চিকিৎসা না হওয়ায় দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে সন্তানদের শারীরিক অবস্থা। সরকারের পাশাপাশি বিত্তবানরা এগিয়ে এলে হয়তো তাদের সন্তানদের সঠিক চিকিৎসা করিয়ে বেঁচে থাকা সম্ভব হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা জয়নাল আবেদিন, বিজলী বেগমসহ বেশ কয়েকজন বলেন, অনেকটাই নিরুপায় হয়ে গেছেন জব্বার আলী ও সুফিয়া বেগম দম্পতি। দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সন্তানদের ভালো করার জন্য। তবে সম্ভব হচ্ছে না। সরকারি সহযোগিতা পেলে কিংবা সমাজের বিত্তবানরা প্রতিবন্ধী শিশুদের পাশে দাঁড়ালে হয়তো তারা উপকৃত হবেন।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ কুমার দেবনাথ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, যতদূর শুনেছি ওই চারজন শিশুকে প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদি তাদের আর্থিক সহযোগিতার প্রয়োজন হয় বা তারা আবেদন করলে আমরা তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করবো।