পুলিশে চাকরিতে টাকা লাগে না, তা বিশ্বাস করাতে চাই : এসপি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) এহতেশামুল হক বলেছেন, ‘টাকা ছাড়া যে পুলিশে চাকরি হয়, সেটা মানুষকে বিশ্বাস করাতে চাই। এজন্য নিয়োগপ্রত্যাশীসহ সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। আগে কী হয়েছে জানি না। অনেক কিছু শুনি, এসব নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না।’
আজ রোববার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার এসব কথা বলেন।
এসপি এহতেশামুল হক বলেন, ‘ট্রইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে মাঠ পরীক্ষায় ৪১৭ জন অংশগ্রহণ করে ২৮৭ জন নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচিত ২৮৭ জনকে আমি আমার ফোন নম্বর দিয়ে দিয়েছি। তাদের বলেছি, যদি কেউ টাকা চায়, তাহলে যেন আমাকে ফোন করে জানায়। আমি টাকাটা পাব কি না। আমি আমার জায়গা থেকে স্বচ্ছতার বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছি। আমি চাচ্ছি শতভাগ স্বচ্ছ একটা নিয়োগ প্রক্রিয়া হোক।’
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘আমার বিবেক দংশন হচ্ছে। স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ দেবো, আর দালালরা কৌশলে টাকা নিয়ে যাবে, এটা কোনোভাবেই হতে পারে না। অস্বচ্ছতার কোনো জায়গা থাকবে না। এদের রোধ করতে হবে।’
এহতেশামুল হক জানান, নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে দালালি করার ঘটনায় জেলার সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ গ্রামের মো. মিলন মিয়া (২৯) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। দালালির বিষয়ে আরও যে খবর আসছে, সেগুলো নজরদারি করা হচ্ছে।
নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিভিন্ন বিষয় স্পষ্ট করে তুলে ধরে পুলিশ সুপার বলেন, শারীরিক বাছাই প্রক্রিয়ায় শতভাগ স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়। প্রত্যেকের পরীক্ষার ভিডিও সংরক্ষণ করা আছে। অনেকে রিভিউ হিসেবে দেখতে এসে লজ্জিত হয়েছেন। তারা বুঝতে পেরেছেন, যে প্রার্থী বাদ পড়েছেন, তারা কী কারণে উত্তীর্ণ হতে পারেননি।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘লিখিত পরীক্ষার সব কিছু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে হবে। পরীক্ষার দিন সকালে প্রশ্নপত্র আসবে। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের খাতা সিলগালা করে পাঠানো হবে। এ ছাড়া এইচএসসি ও এসএসসি স্ট্যান্ডার্ডে পরীক্ষা নেওয়ার পর এমনভাবে খাতা পাঠানো হবে যে কেউ বুঝতে পারবে না কার কোন খাতা। আমরা শুধু ফলাফল শিট পাব। ৬০ মার্কের মধ্যে ২২.৫ পাওয়া প্রর্থীরা লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হিসেবে গণ্য হবেন।’
‘মৌখিক পরীক্ষার ১৫ মার্কের মধ্যে উপস্থিতি হলেই প্রার্থী ৮ মার্ক পাবেন, অর্থাৎ কেউ ফেল করবেন না। যারা ভালো করবেন, তাদের সর্বোচ্চ ১২ মার্ক দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো দালালের মাধ্যমে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। দালালরা যাতে সুযোগ নিতে না পারে সে বিসয়ে নজরদারি অব্যাহত রেখেছি। এমন কিছু পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে’, যোগ করেন এহতেশামুল হক।