অনেকেই জানেন না কতটা ভালো মানুষ ছিলেন তিনি : মিশা
‘পর্দায় তাঁর অভিনয় দেখে সবাই মুগ্ধ। শুধু অভিনয়গুণ দিয়ে কোটি মানুষের হৃদয়ে ভালোবাসার স্থান দখল করেছেন আমাদের দেশের কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি সাহেব। তবে যাঁরা তাঁকে সামনাসামনি দেখেননি, তাঁর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়নি, তাঁদের অনেকেই জানেন না কতটা ভালো মানুষ ছিলেন তিনি।’ হুমায়ুন ফরীদির প্রতি এভাবেই ভালোবাসা প্রকাশ করলেন অভিনেতা মিশা সওদাগর।
মঞ্চ, টেলিভিশনের পাশাপাশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন হুমায়ুন ফরীদি। তাঁর সঙ্গে বেশ কিছু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন মিশা সওদাগর। হুমায়ুন ফরীদির জন্মদিনে (২৯ মে) গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে তাঁকে স্মরণ করছেন মিশা।
এনটিভি অনলাইনকে মিশা সওদাগর বলেন, ‘মানুষ হিসেবে অসাধারণ ছিলেন হুমায়ুন ফরীদি। প্রতিটি মানুষকে ভালোবাসতেন, কোনো বিনিময় আশা করতেন না। শুটিংয়ের সময় সবাইকে খুশি রাখার চেষ্টা করতেন। আর কষ্টগুলো সব সময় নিজের মধ্যে চেপে রাখতেন। একজন ভালো মানুষের যতগুলো গুণ থাকতে পারে, সব গুণ আমি উনার মধ্যে দেখেছি।’
অভিনয় প্রসঙ্গে মিশা সওদাগর বলেন, ‘আমি মনে করি অনেকেই ভালো অভিনেতা হতে পারেন। অনেকেই জন্মগতভাবে ভালো অভিনেতা হন, আবার অনেকে কঠোর সাধনা করে নিজেকে ভালো অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তবে ভালো মানুষ হওয়াটা অনেক কঠিন। আজ হুমায়ুন ফরীদি সাহেবের জন্মদিন, এই দিনে তাঁকে হাজারো সালাম। সবাই দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন তাঁকে বেহেস্তের সর্বোচ্চ জায়গায় স্থান দেন।’
কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি। মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র সব জায়গায় ছিল তাঁর সাবলীল বিচরণ। অভিনয় দিয়ে কেড়েছেন অগণিত দর্শকের হৃদয়। জনপ্রিয় এই অভিনেতাকে হৃদয়ের গভীর থেকে স্মরণ করেন অনুরাগীরা। মৃত্যুর আট বছর পরও সম্প্রতি তাঁর ব্যবহৃত চশমা নিলামে তোলা হলে তিন লাখ ২৫ হাজার ১২ টাকায় কিনে নেন এক ভক্ত।
১৯৮২ সালে হুমায়ুন ফরীদি ‘নীল নকশার সন্ধানে’ নাটকে অভিনয় করেন। এটি ছিল তাঁর প্রথম টেলিভিশন নাটক। এরপর একে একে অভিনয় করেন ‘ভাঙনের শব্দ শোনা যায়’, ‘সংশপ্তক’, ‘দুই ভাই’, ‘শীতের পাখি’ এবং ‘কোথাও কেউ নেই’-এর মতো দর্শকপ্রিয় নাটকে। ‘হুলিয়া’, ‘জয়যাত্রা’, ‘শ্যামলছায়া’, ‘একাত্তরের যিশু’, ‘আনন্দ অশ্রু’সহ অনেক সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। মঞ্চ নাটকের অবাধ বিচরণ ছিল তাঁর।
‘মাতৃত্ব’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন ফরীদি। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে।
জন্মদিনে হুমায়ুন ফরীদিকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছেন অসংখ্য অনুরাগী। ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি না ফেরার দেশে চলে যান এই অভিনেতা।